ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহ আলাইহি, মোল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।
এই তিনজন মহান ইমাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আমরা সেটাই ধারণ করি।
"আল্লামা ইবনে তাইমিয়ার ভুলগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো বাদ দেই (বিশেষ করে আল্লামা ইবনে তাইমিয়ার দেহবাদী আকিদা পুরোপুরি বর্জন করি) এবং তার ইলমি যোগ্যতা এবং খেদমতের স্বীকৃতি প্রদান করি। " ইবনে তায়মিয়্যাহর সমস্যা চিহ্নিত করে ইবনে হাজার আসকালানি র. তার "আদ দুরারুল কামিনা"তে লিখেছেন,
كانَ يتَكَلَّم على المِنبَر على طَريقَة المُفَسّرين مَعَ الفِقْه والحَدِيث فيورد فِي ساعَة من الكتاب والسّنة واللغة والنَّظَر ما لا يقدر أحد على أن يُورِدهُ فِي عدَّة مجالِس كَأن هَذِه العُلُوم بَين عَيْنَيْهِ فَأخذ مِنها ما يَشاء ويذر ومن ثمَّ نسب أصْحابه إلى الغلو فِيهِ واقْتضى لَهُ ذَلِك العجب بِنَفسِهِ حَتّى زها على أبناء جنسه واستشعر أنه مُجْتَهد فَصارَ يرد على صَغِير العلماء وكَبِيرهمْ قويهم وحديثهم حَتّى انْتهى إلى عمر فخطأه فِي شَيْء فَبلغ الشَّيْخ إبْراهِيم الرقي فَأنْكر عَلَيْهِ فَذهب إلَيْهِ واعْتذر واستغفر وقالَ فِي حق عَليّ أخطَأ فِي سَبْعَة عشر شَيْئا ثمَّ خالف فِيها نَص الكتاب مِنها اعْتِداد المتوفي عَنْها زَوجها أطول الأجَليْنِ وكانَ لتعصبه لمَذْهَب الحَنابِلَة يَقع فِي الأشاعرة حَتّى أنه سبّ الغَزالِيّ فَقامَ عَلَيْهِ قوم كادُوا يقتلونه
ইবনে তায়মিয়্যাহ মিম্বরে বসে কথা বলতেন মুফাসসিরদের পদ্ধতিতে, সাথে থাকত ফিকহ ও হাদিসের সম্মিলন। তিনি মুহুর্তের মধ্যে কিতাব, সুন্নাত, ভাষা ও দর্শনের এমন সব বিষয় নিয়ে আসতেন যা অন্যরা একাধিক মজলিসে বসেও করতে পারত না। তার এমন অবস্থা হয়েছিল যেন সকল ইলম তার চোখের সামনে থাকত, যেটা চাইতেন নিয়ে নিতেন, যেটা চাইতেন না রেখে দিতেন। আর এখান থেকেই তার সঙ্গীরা তার ব্যাপারে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হয়। আর এর ফলে ইবনে তায়মিয়্যাহর মনে নিজেকে নিয়ে গরিমা তৈরি হয়। ফলে তিনি তার সমকালীনদের ওপর গর্ব করা শুরু করেন, নিজেকে তিনি মুজতাহিদ ভাবতেন এবং ছোট-বড় সকল আলেমকে খণ্ডন করা শুরু করেন। এমনকি খণ্ডন করতে করতে তিনি হযরত ওমর পর্যন্ত চলে যান এবং তাকে একটি বিষয়ে ভুল সাব্যস্ত করেন। শায়খ ইব্রাহিম রাকির কাছে এই সংবাদ পৌঁছালে তিনি তার নিন্দা করেন। পরে তিনি তার কাছে গিয়ে নিজের ওযর উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়ে আসেন। তিনি আলীর ব্যাপারে বলেন, তিনি সতেরটি বিষয়ে ভুল করেছেন, যার একটি কোরআনের স্পষ্ট বক্তব্যের বিরোধী - মৃত স্বামীর বিধবা দুই সময়ের (স্বাভাবিক ইদ্দত ও প্রসব) দীর্ঘটা গ্রহণ করবে। তিনি হাম্বলিদের মাযহাবের প্রতি পক্ষপাত থেকে আশআরিদের সমালোচনায় লিপ্ত হতেন এমনকি তিনি গাযালিকে গালি দিয়ে বসেন। এর ফলে এক দল লোক তার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং তাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়।"
আদ দুরারুল কামিনা।
والله أعلم بالصواب