১. ইমামের কিরাত-ই মুক্তাদির কিরাত। মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ৩৮২৩।
عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : كل من كان له إمام فقراءته له قراءة. أخرجه ابن أبي شيبة (٣٨٢٣)
এটি হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান রাহ. (১৩২-১৮৯হি.)ও তাঁর ‘আলআছার’ গ্রন্থে তা বর্ণনা করেছেন।
২. তাঁর সনদে হাদীসটির আরবী পাঠ নিম্নরূপ :
أخبرنا أبو حنيفة قال : حدثنا أبو الحسن موسى بن أبي عائشة، عن عبد الله بن شداد بن الهاد، عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما قال : صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم، ورجل خلفه يقرأ، فجعل رجل من أصحاب النبي صلى اللهُ عليه وسلم ينهاه عن القراءة في الصلاة، فقال : أتنهاني عن القراءة خلف نبي الله صلى الله عليه وسلم، فتنازعا حتى ذكر ذلك للنبي صلى الله عليه وسلم، فقال النبي صلى الله عليه وسلم : من صلى خلف إمام ، فإن قراءة الإمام له قراءة.
অর্থাৎ ইমাম মুহাম্মাদ আবু হানীফা থেকে, তিনি আবুল হাসান মূসা ইবনে আবী আয়েশা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনে হাদ থেকে, তিনি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়েছেন। তাঁর পেছনে এক লোক কুরআন পড়তে আরম্ভ করল। তখন এক সাহাবী তাকে নামাযে (ইমামের পেছনে) কুরআন পড়তে নিষেধ করলে সে বলল, তুমি কি আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে কুরআন পড়তে নিষেধ করছ? এভাবে দুজনের মাঝে তর্ক হলে বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উল্লেখ করা হল। তিনি বললেন, যে ইমামের পেছনে নামায পড়ে ইমামের কেরাতই তার কেরাত। -কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মদ ১/১১১, হাদীস ৮৬
৩. ইমরান ইবনে হুছাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের নামায পড়েছেন আর তাঁর পেছনে এক ব্যক্তি سبح اسم ربك الأعلى পড়তে লাগল। নামায শেষ করে তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে পড়েছে? এক ব্যক্তি বলল, আমি। তখন তিনি বললেন, আমি ধারণা করেছি, তোমাদের কেউ কুরআন পড়ায় আমার সঙ্গে টানাটানি করছে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৯৮
সনদসহ হাদীসটি হলো -
حدثنا محمد بن المثنى ومحمد بن بشار قالا : حدثنا محمد بن جعفر، حدثنا شعبة، عن قتادة قال : سمعت زرارة بن أوفى يحدث عن عمران بن حصين أن رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الظهر، فجعل رجل يقرأ خلفه بسبح اسم ربك الأعلى، فلما انصرف قال : أيكم قرأ أو أيكم القارئ؟ فقال رجل : أنا فقال : قد ظننت أن بعضكم خالجنيها.
৪. আতা ইবনে ইয়াসার থেকে বর্ণিত, তিনি যায়েদ ইবনে ছাবিত রা.-কে ইমামের সঙ্গে মুকতাদী কুরআন পড়বে কি না জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, কোনো নামাযেই ইমামের সঙ্গে মুকতাদী কুরআন পড়বে না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭৭
সনদসহ আছারটি হলো-
حدثنا يحيى بن يحيى ويحيى بن أيوب وقتيبة بن سعيد وابن حجر ، قال يحيى بن يحيى: أخبرنا. وقال الآخرون : حدثنا إسماعيل، وهو بن جعفر، عن يزيد بن خصيفة، عن ابن قسيط، عن عطاء بن يسار أنه أخبره أنه سأل زيد بن ثابت عن القراءة مع الإمام، فقال : لا قراءة مع الإمام في شيء.
আরো দেখুন, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৮০৪, ৩৮০৮, ৩৮০৯; শরহু মাআনিল আছার (নুখাবুল আফকারসহ) ২/৫৭০-৫৭১
৫. আবু মূসা আশআরী (রা.) বলেন- রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে ভাষণ দিলেন। আমাদেরকে দ্বীনের পথ বুঝিয়ে দিলেন। তিনি আমাদেরকে নামাজ শেখালেন। তিনি বললেন, তোমরা যখন নামাজ পড়বে তখন কাতার সোজা করবে। অতঃপর তোমাদের একজন যেন ইমামতি করে। ইমাম যখন তাকবির বলবে তখন তোমরাও তাকবির বলবে। আর যখন ইমাম পড়ে তখন তোমরা চুপ থাকবে। ইমাম যখন গাইরিল মাগদু বিআলাইহিম ওয়ালাদ দল্লীন বলবে তখন তোমরা আমিন বলবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪০৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৯৭৩)
তাই ইমামের ইক্তিদায় নামায পড়লে কিরাত পড়তে হয় না। তার পরও যদি কেই কিরাত পড়ে তাহলে ঐ ব্যক্তির নামাযের সাওয়াব কম হবে। নামায মাকরুহ হবে। তবে নামায আদায় হয়ে যাবে।
৬. মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা-এর মধ্যে রয়েছে ,
وذهب الحنفية إلى أن المأموم لا يقرأ مطلقا خلف الإمام حتى في الصلاة السرية ، ويكره تحريما أن يقرأ خلف الإمام
অর্থাৎ, এবং হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কিরাম এই দিকে গিয়েছেন যে, মুক্তাদী ইমামের পিছনে কোন অবস্থায় কিরাত পড়বে না। এমন কি নিরবে কিরাত পড়ার নামাযেও। এবং ইমামের পিছনে কিরাত পড়া মাকরূহে তাহরীমী। (আল মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়্যা ৩৩/৫৩)