অনুবাদ
তেলাওয়াত

১৯ . মারইয়াম - (مريم) | মারইয়াম (ঈসা নবীর মা)

makkah, মোট আয়াতঃ ৯৮

كٓهيعٓصٓ

অর্থ: কাফ-হা-ইয়া-‘আঈন-সোয়াদ।

ذِكْرُ رَحْمَتِ رَبِّكَ عَبْدَهُۥ زَكَرِيَّآ

অর্থ: এটা তোমার রবের রহমতের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়্যার প্রতি।

إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥ نِدَآءً خَفِيًّا

অর্থ: যখন সে তার রবকে গোপনে ডেকেছিল।

قَالَ رَبِّ إِنِّى وَهَنَ ٱلْعَظْمُ مِنِّى وَٱشْتَعَلَ ٱلرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُنۢ بِدُعَآئِكَ رَبِّ شَقِيًّا

অর্থ: সে বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমার হাড়গুলো দুর্বল হয়ে গেছে এবং বার্ধক্যবশতঃ আমার মাথার চুলগুলো সাদা হয়ে গেছে। হে আমার রব, আপনার নিকট দো‘আ করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি’।

وَإِنِّى خِفْتُ ٱلْمَوَٰلِىَ مِن وَرَآءِى وَكَانَتِ ٱمْرَأَتِى عَاقِرًا فَهَبْ لِى مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا

অর্থ: ‘আর আমার পরে স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে আমি আশংকাবোধ করছি। আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা, অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ থেকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন’।

يَرِثُنِى وَيَرِثُ مِنْ ءَالِ يَعْقُوبَ ۖ وَٱجْعَلْهُ رَبِّ رَضِيًّا

অর্থ: ‘যে আমার উত্তরাধিকারী হবে এবং ইয়াকূবের বংশের উত্তরাধিকারী হবে। হে আমার রব, আপনি তাকে পছন্দনীয় বানিয়ে দিন’।

يَـٰزَكَرِيَّآ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَـٰمٍ ٱسْمُهُۥ يَحْيَىٰ لَمْ نَجْعَل لَّهُۥ مِن قَبْلُ سَمِيًّا

অর্থ: (আল্লাহ বললেন) ‘হে যাকারিয়্যা, আমি তোমাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে কাউকে আমি এ নাম দেইনি’।

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَـٰمٌ وَكَانَتِ ٱمْرَأَتِى عَاقِرًا وَقَدْ بَلَغْتُ مِنَ ٱلْكِبَرِ عِتِيًّا

অর্থ: সে বলল, ‘হে আমার রব, কিভাবে আমার পুত্র সন্তান হবে, আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা, আর আমিও তো বার্ধক্যের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি’।

قَالَ كَذَٰلِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌ وَقَدْ خَلَقْتُكَ مِن قَبْلُ وَلَمْ تَكُ شَيْـًٔا

অর্থ: সে (ফেরেশতা) বলল, ‘এভাবেই’। তোমার রব বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য সহজ। আমি তো ইতঃপূর্বে তোমাকে সৃষ্টি করেছি, তখন তুমি কিছুই ছিলে না’।

১০

قَالَ رَبِّ ٱجْعَل لِّىٓ ءَايَةً ۚ قَالَ ءَايَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَ لَيَالٍ سَوِيًّا

অর্থ: সে বলল, ‘হে আমার রব, আমার জন্য একটি নিদর্শন ঠিক করে দিন’। তিনি বললেন, ‘তোমার জন্য এটাই নিদর্শন যে, তুমি সুস্থ থেকেও তিন রাত কারো সাথে কথা বলবে না’।

১১

فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوْمِهِۦ مِنَ ٱلْمِحْرَابِ فَأَوْحَىٰٓ إِلَيْهِمْ أَن سَبِّحُوا۟ بُكْرَةً وَعَشِيًّا

অর্থ: অতঃপর সে মিহরাব হতে বেরিয়ে তার লোকদের সামনে আসল এবং ইশারায় তাদেরকে বলল যে, ‘তোমরা সকাল ও সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠ কর’।

১২

يَـٰيَحْيَىٰ خُذِ ٱلْكِتَـٰبَ بِقُوَّةٍ ۖ وَءَاتَيْنَـٰهُ ٱلْحُكْمَ صَبِيًّا

অর্থ: ‘হে ইয়াহইয়া, তুমি কিতাবটিকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর’। আমি তাকে শৈশবেই প্রজ্ঞা* দান করেছি। * এখানে ‘হুকম’ বলতে হিকমাত বা প্রজ্ঞা বুঝানো হয়েছে। কারো মতে, তা হল ইলম ও আমল। কেউ বলেছেন, নবুওয়াত বা আকল। ইমাম শওকানী বলেন, উল্লেখিত প্রতিটি বিষয় ‘হুকম’ দ্বারা উদ্দেশ্য হতে পারে।

১৩

وَحَنَانًا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَوٰةً ۖ وَكَانَ تَقِيًّا

অর্থ: আর আমার পক্ষ থেকে তাকে স্নেহ-মমতা ও পবিত্রতা দান করেছি এবং সে মুত্তাকী ছিল।

১৪

وَبَرًّۢا بِوَٰلِدَيْهِ وَلَمْ يَكُن جَبَّارًا عَصِيًّا

অর্থ: আর সে ছিল তার পিতা-মাতার সাথে সদাচারী, আর ছিল না অহংকারী, অবাধ্য।

১৫

وَسَلَـٰمٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا

অর্থ: আর তার উপর শান্তি, যেদিন সে জন্মেছে এবং যেদিন সে মারা যাবে আর যেদিন তাকে জীবিত অবস্থায় উঠানো হবে।

১৬

وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ مَرْيَمَ إِذِ ٱنتَبَذَتْ مِنْ أَهْلِهَا مَكَانًا شَرْقِيًّا

অর্থ: আর স্মরণ কর এই কিতাবে মারইয়ামকে যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে পৃথক হয়ে পূর্ব দিকের কোন এক স্থানে চলে গেল।

১৭

فَٱتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَآ إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا

অর্থ: আর সে তাদের নিকট থেকে (নিজকে) আড়াল করল। তখন আমি তার নিকট আমার রূহ (জিবরীল) কে প্রেরণ করলাম। অতঃপর সে তার সামনে পূর্ণ মানবের রূপ ধারণ করল।

১৮

قَالَتْ إِنِّىٓ أَعُوذُ بِٱلرَّحْمَـٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا

অর্থ: মারইয়াম বলল, ‘আমি তোমার থেকে পরম করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি, যদি তুমি মুত্তাকী হও’।

১৯

قَالَ إِنَّمَآ أَنَا۠ رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَـٰمًا زَكِيًّا

অর্থ: সে বলল, ‘আমি তো কেবল তোমার রবের বার্তাবাহক, তোমাকে একজন পবিত্র পুত্রসন্তান দান করার জন্য এসেছি’।

২০

قَالَتْ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَـٰمٌ وَلَمْ يَمْسَسْنِى بَشَرٌ وَلَمْ أَكُ بَغِيًّا

অর্থ: মারইয়াম বলল, ‘কিভাবে আমার পুত্র সন্তান হবে? অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি। আর আমি তো ব্যভিচারিণীও নই’।

২১

قَالَ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌ ۖ وَلِنَجْعَلَهُۥٓ ءَايَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا

অর্থ: সে বলল, ‘এভাবেই। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর যেন আমি তাকে করে দেই মানুষের জন্য নিদর্শন এবং আমার পক্ষ থেকে রহমত। আর এটি একটি সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’।

২২

۞ فَحَمَلَتْهُ فَٱنتَبَذَتْ بِهِۦ مَكَانًا قَصِيًّا

অর্থ: তারপর সে তাকে গর্ভে ধারণ করল এবং তা নিয়ে দূরবর্তী একটি স্থানে চলে গেল।

২৩

فَأَجَآءَهَا ٱلْمَخَاضُ إِلَىٰ جِذْعِ ٱلنَّخْلَةِ قَالَتْ يَـٰلَيْتَنِى مِتُّ قَبْلَ هَـٰذَا وَكُنتُ نَسْيًا مَّنسِيًّا

অর্থ: অতঃপর প্রসব-বেদনা তাকে খেজুর গাছের কান্ডের কাছে নিয়ে এলো। সে বলল, ‘হায়! এর আগেই যদি আমি মরে যেতাম এবং সম্পূর্ণরূপে বিস্মৃত হতাম’!

২৪

فَنَادَىٰهَا مِن تَحْتِهَآ أَلَّا تَحْزَنِى قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِيًّا

অর্থ: তখন তার নিচ থেকে সে তাকে ডেকে বলল যে, ‘তুমি চিন্তা করো না। তোমার রব তোমার নিচে একটি ঝর্ণা সৃষ্টি করেছেন’।

২৫

وَهُزِّىٓ إِلَيْكِ بِجِذْعِ ٱلنَّخْلَةِ تُسَـٰقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا

অর্থ: ‘আর তুমি খেজুর গাছের কান্ড ধরে তোমার দিকে নাড়া দাও, তাহলে তা তোমার উপর তাজা-পাকা খেজুর ফেলবে’।

২৬

فَكُلِى وَٱشْرَبِى وَقَرِّى عَيْنًا ۖ فَإِمَّا تَرَيِنَّ مِنَ ٱلْبَشَرِ أَحَدًا فَقُولِىٓ إِنِّى نَذَرْتُ لِلرَّحْمَـٰنِ صَوْمًا فَلَنْ أُكَلِّمَ ٱلْيَوْمَ إِنسِيًّا

অর্থ: ‘অতঃপর তুমি খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। আর যদি তুমি কোন লোককে দেখতে পাও তাহলে বলে দিও, ‘আমি পরম করুণাময়ের জন্য চুপ থাকার মানত করেছি। অতএব আজ আমি কোন মানুষের সাথে কিছুতেই কথা বলব না’।

২৭

فَأَتَتْ بِهِۦ قَوْمَهَا تَحْمِلُهُۥ ۖ قَالُوا۟ يَـٰمَرْيَمُ لَقَدْ جِئْتِ شَيْـًٔا فَرِيًّا

অর্থ: তারপর সে তাকে কোলে নিয়ে নিজ কওমের নিকট আসল। তারা বলল, ‘হে মারইয়াম! তুমি তো এক অদ্ভূত বিষয় নিয়ে এসেছ’!

২৮

يَـٰٓأُخْتَ هَـٰرُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ ٱمْرَأَ سَوْءٍ وَمَا كَانَتْ أُمُّكِ بَغِيًّا

অর্থ: ‘হে হারূনের বোন! তোমার পিতা তো খারাপ লোক ছিল না। আর তোমার মা-ও ছিল না ব্যভিচারিণী’।

২৯

فَأَشَارَتْ إِلَيْهِ ۖ قَالُوا۟ كَيْفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِى ٱلْمَهْدِ صَبِيًّا

অর্থ: তখন সে শিশুটির দিকে ইশারা করল। তারা বলল, ‘যে কোলের শিশু আমরা কিভাবে তার সাথে কথা বলব’?

৩০

قَالَ إِنِّى عَبْدُ ٱللَّهِ ءَاتَىٰنِىَ ٱلْكِتَـٰبَ وَجَعَلَنِى نَبِيًّا

অর্থ: শিশুটি বলল, ‘আমি তো আল্লাহর বান্দা; তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন’।

৩১

وَجَعَلَنِى مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنتُ وَأَوْصَـٰنِى بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ مَا دُمْتُ حَيًّا

অর্থ: ‘আর যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন এবং যতদিন আমি জীবিত থাকি তিনি আমাকে সালাত ও যাকাত আদায় করতে আদেশ করেছেন’।

৩২

وَبَرًّۢا بِوَٰلِدَتِى وَلَمْ يَجْعَلْنِى جَبَّارًا شَقِيًّا

অর্থ: ‘আর আমাকে মায়ের প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে অহঙ্কারী, অবাধ্য করেননি’।

৩৩

وَٱلسَّلَـٰمُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا

অর্থ: ‘আর আমার উপর শান্তি, যেদিন আমি জন্মেছি এবং যেদিন আমি মারা যাব আর যেদিন আমাকে জীবিত অবস্থায় উঠানো হবে’।

৩৪

ذَٰلِكَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ ۚ قَوْلَ ٱلْحَقِّ ٱلَّذِى فِيهِ يَمْتَرُونَ

অর্থ: এই হচ্ছে মারইয়াম পুত্র ঈসা। এটাই সঠিক বক্তব্য, যে বিষয়ে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করছে।

৩৫

مَا كَانَ لِلَّهِ أَن يَتَّخِذَ مِن وَلَدٍ ۖ سُبْحَـٰنَهُۥٓ ۚ إِذَا قَضَىٰٓ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ

অর্থ: সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়। তিনি পবিত্র-মহান। তিনি যখন কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তখন তদুদ্দেশ্যে শুধু বলেন, ‘হও’, অমনি তা হয়ে যায়।

৩৬

وَإِنَّ ٱللَّهَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۚ هَـٰذَا صِرَٰطٌ مُّسْتَقِيمٌ

অর্থ: আর নিশ্চয় আল্লাহ আমার রব এবং তোমাদের রব। সুতরাং তোমরা তাঁর ইবাদাত কর। এটাই সরল পথ।

৩৭

فَٱخْتَلَفَ ٱلْأَحْزَابُ مِنۢ بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن مَّشْهَدِ يَوْمٍ عَظِيمٍ

অর্থ: এরপর তাদের মধ্য থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ করল। কাজেই মহাদিবস প্রত্যক্ষকালে কাফিরদের ধ্বংস অনিবার্য।

৩৮

أَسْمِعْ بِهِمْ وَأَبْصِرْ يَوْمَ يَأْتُونَنَا ۖ لَـٰكِنِ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٱلْيَوْمَ فِى ضَلَـٰلٍ مُّبِينٍ

অর্থ: যেদিন তারা আমার কাছে আসবে সেদিন তারা কতই না স্পষ্টভাবে শুনতে পাবে এবং দেখতে পাবে! কিন্তু যালিমরা আজ স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে।

৩৯

وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ ٱلْحَسْرَةِ إِذْ قُضِىَ ٱلْأَمْرُ وَهُمْ فِى غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ

অর্থ: আর তাদেরকে সতর্ক করে দাও পরিতাপ দিবস সম্পর্কে যখন সব বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে, অথচ তারা রয়েছে উদাসীনতায় বিভোর এবং তারা ঈমান আনছে না।

৪০

إِنَّا نَحْنُ نَرِثُ ٱلْأَرْضَ وَمَنْ عَلَيْهَا وَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ

অর্থ: নিশ্চয় আমি যমীন ও এর উপরে যা রয়েছে তার চূড়ান্ত মালিক হব* এবং আমারই নিকট তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। * চূড়ান্ত ওয়ারিস বলতে বুঝানো হয়েছে চূড়ান্ত মালিক অর্থাৎ সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর একমাত্র আল্লাহই থাকবেন এবং সবকিছু থাকবে তাঁর মালিকানাধীন।

৪১

وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِبْرَٰهِيمَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا

অর্থ: আর স্মরণ কর এই কিতাবে ইবরাহীমকে। নিশ্চয় সে ছিল পরম সত্যবাদী, নবী।

৪২

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَـٰٓأَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِى عَنكَ شَيْـًٔا

অর্থ: যখন সে তার পিতাকে বলল, ‘হে আমার পিতা, তুমি কেন তার ইবাদাত কর যে না শুনতে পায়, না দেখতে পায় এবং না তোমার কোন উপকারে আসতে পারে’?

৪৩

يَـٰٓأَبَتِ إِنِّى قَدْ جَآءَنِى مِنَ ٱلْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَٱتَّبِعْنِىٓ أَهْدِكَ صِرَٰطًا سَوِيًّا

অর্থ: ‘হে আমার পিতা! আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে যা তোমার কাছে আসেনি, সুতরাং আমার অনুসরণ কর, তাহলে আমি তোমাকে সঠিক পথ দেখাব’।

৪৪

يَـٰٓأَبَتِ لَا تَعْبُدِ ٱلشَّيْطَـٰنَ ۖ إِنَّ ٱلشَّيْطَـٰنَ كَانَ لِلرَّحْمَـٰنِ عَصِيًّا

অর্থ: ‘হে আমার পিতা, তুমি শয়তানের ইবাদাত করো না। নিশ্চয় শয়তান হল পরম করুণাময়ের অবাধ্য’।

৪৫

يَـٰٓأَبَتِ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ ٱلرَّحْمَـٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّيْطَـٰنِ وَلِيًّا

অর্থ: ‘হে আমার পিতা, আমি আশংকা করছি যে, পরম করুণাময়ের (পক্ষ থেকে) তোমাকে আযাব স্পর্শ করবে, ফলে তুমি শয়তানের সঙ্গী হয়ে যাবে।’

৪৬

قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنْ ءَالِهَتِى يَـٰٓإِبْرَٰهِيمُ ۖ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ ۖ وَٱهْجُرْنِى مَلِيًّا

অর্থ: সে বলল, ‘হে ইবরাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে বিমুখ? যদি তুমি বিরত না হও, তবে অবশ্যই আমি তোমাকে পাথর মেরে হত্যা করব। আর তুমি চিরতরে আমাকে ছেড়ে যাও’।* * ইবনে আব্বাসের মতে এ আয়াতের অর্থ হল তুমি আমার কাছ থেকে নিরাপদে সরে যাও। কেউ কেউ এ আয়াতের অর্থে বলেছেন, ‘তুমি আমার সাথে দীর্ঘ সময়ের জন্য কথা বলবে না’। (আত্-তাফসীর আল-মুয়াস্‌সার)

৪৭

قَالَ سَلَـٰمٌ عَلَيْكَ ۖ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّىٓ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ بِى حَفِيًّا

অর্থ: ইবরাহীম বলল, ‘তোমার প্রতি সালাম। আমি আমার রবের কাছে তোমার জন্য ক্ষমা চাইব। নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি বড়ই অনুগ্রহশীল’।

৪৮

وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَأَدْعُوا۟ رَبِّى عَسَىٰٓ أَلَّآ أَكُونَ بِدُعَآءِ رَبِّى شَقِيًّا

অর্থ: ‘আর আমি তোমাদের ও আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদাত তোমরা কর তাদের পরিত্যাগ করছি এবং আমি আমার রবের ইবাদাত করছি। আশা করি আমার রবের ইবাদাত করে আমি ব্যর্থ হব না’।

৪৯

فَلَمَّا ٱعْتَزَلَهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَهَبْنَا لَهُۥٓ إِسْحَـٰقَ وَيَعْقُوبَ ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا نَبِيًّا

অর্থ: অতঃপর যখন সে তাদেরকে এবং আল্লাহ ছাড়া যাদের তারা ইবাদাত করত তাদের সবাইকে পরিত্যাগ করল, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব এবং তাদের প্রত্যেককে নবী করলাম।

৫০

وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا

অর্থ: আর আমি তাদেরকে আমার অনুগ্রহ দান করলাম আর তাদের সুনাম সুখ্যাতিকে সমুচ্চ করলাম।

৫১

وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ مُوسَىٰٓ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخْلَصًا وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا

অর্থ: আর স্মরণ কর এই কিতাবে মূসাকে। অবশ্যই সে ছিল মনোনীত এবং সে ছিল রাসূল, নবী।

৫২

وَنَـٰدَيْنَـٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلْأَيْمَنِ وَقَرَّبْنَـٰهُ نَجِيًّا

অর্থ: আমি তাকে তূর পর্বতের ডান দিক থেকে ডেকেছিলাম এবং অন্তরঙ্গ আলাপের উদ্দেশ্যে তাকে আমার নিকটবর্তী করেছিলাম।

৫৩

وَوَهَبْنَا لَهُۥ مِن رَّحْمَتِنَآ أَخَاهُ هَـٰرُونَ نَبِيًّا

অর্থ: আর আমি স্বীয় অনুগ্রহে তার জন্য তার ভাই হারূনকে নবীরূপে দান করলাম।

৫৪

وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِسْمَـٰعِيلَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صَادِقَ ٱلْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا

অর্থ: আর স্মরণ কর এই কিতাবে ইসমাঈলকে। সে ছিল সত্যিকারের ওয়াদা পালনকারী এবং সে ছিল রাসূল, নবী।

৫৫

وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُۥ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِۦ مَرْضِيًّا

অর্থ: আর সে তার পরিবার-পরিজনকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার রবের সন্তোষপ্রাপ্ত।

৫৬

وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِدْرِيسَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا

অর্থ: আর স্মরণ কর এই কিতাবে ইদরীসকে। সে ছিল পরম সত্যনিষ্ঠ নবী।

৫৭

وَرَفَعْنَـٰهُ مَكَانًا عَلِيًّا

অর্থ: আর আমি তাকে উচ্চ মর্যাদায় সমুন্নত করেছিলাম।

৫৮

أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ مِن ذُرِّيَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْرَٰٓءِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَٱجْتَبَيْنَآ ۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتُ ٱلرَّحْمَـٰنِ خَرُّوا۟ سُجَّدًا وَبُكِيًّا ۩

অর্থ: এরাই সে সব নবী, আদম সন্তানের মধ্য থেকে যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং যাদের আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম। আর ইবরাহীম ও ইসরাঈলের বংশোদ্ভূত এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম। যখন তাদের কাছে পরম করুণাময়ের আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তারা কাঁদতে কাঁদতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত।[সাজদাহ]

৫৯

۞ فَخَلَفَ مِنۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُوا۟ ٱلشَّهَوَٰتِ ۖ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا

অর্থ: তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শীঘ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।

৬০

إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحًا فَأُو۟لَـٰٓئِكَ يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ شَيْـًٔا

অর্থ: তবে তারা নয় যারা তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে; তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি কোন যুলম করা হবে না।

৬১

جَنَّـٰتِ عَدْنٍ ٱلَّتِى وَعَدَ ٱلرَّحْمَـٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعْدُهُۥ مَأْتِيًّا

অর্থ: তা চিরস্থায়ী জান্নাত, যার ওয়াদা পরম করুণাময় তাঁর বান্দাদের দিয়েছেন গায়েবের সাথে। নিশ্চয় তাঁর ওয়াদাকৃত বিষয় অবশ্যম্ভাবী।

৬২

لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَـٰمًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا

অর্থ: তারা সেখানে ‘শান্তি’ ছাড়া কোন অর্থহীন কথা শুনবে না এবং সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় তাদের জন্য থাকবে তাদের রিয্ক।

৬৩

تِلْكَ ٱلْجَنَّةُ ٱلَّتِى نُورِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِيًّا

অর্থ: সেই জান্নাত, আমি যার উত্তরাধিকারী বানাব আমার বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে যারা মুত্তাকী।

৬৪

وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ ۖ لَهُۥ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَٰلِكَ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا

অর্থ: (জিবরীল বলল) ‘আর আমরা আপনার রবের নির্দেশ ছাড়া অবতরণ করি না। যা আমাদের সামনে আছে, আর যা আছে আমাদের পিছনে এবং যা রয়েছে এতদোভয়ের মধ্যে, সব তাঁরই মালিকানাধীন। আর আপনার রব ভুলে যান না।

৬৫

رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَٱعْبُدْهُ وَٱصْطَبِرْ لِعِبَـٰدَتِهِۦ ۚ هَلْ تَعْلَمُ لَهُۥ سَمِيًّا

অর্থ: তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এতদোভয়ের মধ্যে যা আছে তার রব। সুতরাং তাঁর ইবাদাত কর এবং তাঁরই ইবাদাতে ধৈর্যশীল থাক। তুমি কি তাঁর সমতুল্য কাউকে জান?

৬৬

وَيَقُولُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَءِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ أُخْرَجُ حَيًّا

অর্থ: আর মানুষ বলে, ‘আমার মৃত্যু হলে আমাকে কি জীবিত অবস্থায় উত্থিত করা হবে?’

৬৭

أَوَلَا يَذْكُرُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَنَّا خَلَقْنَـٰهُ مِن قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْـًٔا

অর্থ: মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি অথচ সে কিছুই ছিল না?

৬৮

فَوَرَبِّكَ لَنَحْشُرَنَّهُمْ وَٱلشَّيَـٰطِينَ ثُمَّ لَنُحْضِرَنَّهُمْ حَوْلَ جَهَنَّمَ جِثِيًّا

অর্থ: অতএব তোমার রবের কসম, আমি অবশ্যই তাদেরকে ও শয়তানদেরকে সমবেত করব, অতঃপর জাহান্নামের চারপাশে নতজানু অবস্থায় তাদেরকে হাযির করব।

৬৯

ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِيعَةٍ أَيُّهُمْ أَشَدُّ عَلَى ٱلرَّحْمَـٰنِ عِتِيًّا

অর্থ: তারপর প্রত্যেক দল থেকে পরম করুণাময়ের বিরুদ্ধে সর্বাধিক অবাধ্যকে আমি টেনে বের করবই।

৭০

ثُمَّ لَنَحْنُ أَعْلَمُ بِٱلَّذِينَ هُمْ أَوْلَىٰ بِهَا صِلِيًّا

অর্থ: উপরন্তু আমি সর্বাধিক ভাল জানি তাদের সম্পর্কে, যারা জাহান্নামে দগ্ধীভূত হবার অধিকতর যোগ্য।

৭১

وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا

অর্থ: আর তোমাদের প্রত্যেককেই তা অতিক্রম করতে হবে, এটি তোমার রবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

৭২

ثُمَّ نُنَجِّى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوا۟ وَّنَذَرُ ٱلظَّـٰلِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا

অর্থ: তারপর আমি এদেরকে মুক্তি দেব যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে। আর যালিমদেরকে আমি সেখানে রেখে দেব নতজানু অবস্থায়।

৭৩

وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتُنَا بَيِّنَـٰتٍ قَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَىُّ ٱلْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَامًا وَأَحْسَنُ نَدِيًّا

অর্থ: আর যখন তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন কাফিররা ঈমানদারদেরকে বলে, ‘দুই দলের মধ্যে কোন্টি মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতর এবং মজলিস হিসেবে উত্তম?’

৭৪

وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَحْسَنُ أَثَـٰثًا وَرِءْيًا

অর্থ: আর তাদের পূর্বে আমি কত প্রজন্ম ধ্বংস করে দিয়েছি যারা সাজ-সরঞ্জাম ও বাহ্যদৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ ছিল!

৭৫

قُلْ مَن كَانَ فِى ٱلضَّلَـٰلَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ ٱلرَّحْمَـٰنُ مَدًّا ۚ حَتَّىٰٓ إِذَا رَأَوْا۟ مَا يُوعَدُونَ إِمَّا ٱلْعَذَابَ وَإِمَّا ٱلسَّاعَةَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضْعَفُ جُندًا

অর্থ: বল, ‘যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাকে পরম করুণাময় প্রচুর অবকাশ দেবেন, যতক্ষণ না তারা যে বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করবে, চাই তা আযাব হোক অথবা কিয়ামত। তখন তারা জানতে পারবে কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট ও দলবলে দুর্বল।

৭৬

وَيَزِيدُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ٱهْتَدَوْا۟ هُدًى ۗ وَٱلْبَـٰقِيَـٰتُ ٱلصَّـٰلِحَـٰتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ مَّرَدًّا

অর্থ: আর যারা সঠিক পথে চলে আল্লাহ তাদের হিদায়াত বৃদ্ধি করেন আর স্থায়ী সৎকর্মসমূহ তোমার রবের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং পরিণতি হিসেবেও শ্রেষ্ঠ।

৭৭

أَفَرَءَيْتَ ٱلَّذِى كَفَرَ بِـَٔايَـٰتِنَا وَقَالَ لَأُوتَيَنَّ مَالًا وَوَلَدًا

অর্থ: তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখেছ* যে আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে এবং বলে, ‘আমাকে অবশ্যই ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেয়া হবে।’ * উল্লিখিত আয়াত ক’টি ‘আস ইবন ওয়ায়েল সম্পর্কে নাযিল হয়। তাঁর কাছে খাববাব ইবনুল আরাত (রা.)এর কিছু ঋণ পাওনা ছিল। তা চাইতে গেলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে বলে,‘আমি যখন মারা যাব, অতঃপর আবার জীবিত হব তখন তুমি আমার কাছে এসো। তখনো আমাকে সন্তান-সন্ততি দেয়া হবে। সেখান থেকে তোমার ঋণ পরিশোধ করব’।

৭৮

أَطَّلَعَ ٱلْغَيْبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا

অর্থ: সে কি গায়েব সম্পর্কে অবহিত হয়েছে, না পরম করুণাময়ের কাছ থেকে কোন প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে?

৭৯

كَلَّا ۚ سَنَكْتُبُ مَا يَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُۥ مِنَ ٱلْعَذَابِ مَدًّا

অর্থ: কখনো নয়, সে যা বলে আমি তা লিখে রাখব এবং তার আযাব বাড়াতেই থাকব।

৮০

وَنَرِثُهُۥ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا

অর্থ: আর সে যা বলে আমি তার অধিকারী হব এবং আমার কাছে সে একাকী আসবে।

৮১

وَٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ ءَالِهَةً لِّيَكُونُوا۟ لَهُمْ عِزًّا

অর্থ: আর তারা আল্লাহ ছাড়া বহু ‘ইলাহ’ গ্রহণ করেছে, যাতে ওরা তাদের সাহায্যকারী হতে পারে।

৮২

كَلَّا ۚ سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا

অর্থ: কখনো নয়, এরা তাদের ইবাদাতের কথা অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষ হয়ে যাবে।

৮৩

أَلَمْ تَرَ أَنَّآ أَرْسَلْنَا ٱلشَّيَـٰطِينَ عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ تَؤُزُّهُمْ أَزًّا

অর্থ: তুমি কি লক্ষ্য করনি যে, আমি কাফিরদের জন্য শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি; ওরা তাদেরকে বিশেষভাবে প্ররোচিত করে?

৮৪

فَلَا تَعْجَلْ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا

অর্থ: সুতরাং তাদের ব্যাপারে তুমি তাড়াহুড়া করো না; আমি তো কেবল তাদের জন্য নির্ধারিত কাল গণনা করছি,

৮৫

يَوْمَ نَحْشُرُ ٱلْمُتَّقِينَ إِلَى ٱلرَّحْمَـٰنِ وَفْدًا

অর্থ: যেদিন পরম করুণাময়ের নিকট মুত্তাকীদেরকে সম্মানিত মেহমানরূপে সমবেত করব,

৮৬

وَنَسُوقُ ٱلْمُجْرِمِينَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرْدًا

অর্থ: আর অপরাধীদেরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাব।

৮৭

لَّا يَمْلِكُونَ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَنِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا

অর্থ: যারা পরম করুণাময়ের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে তারা ছাড়া অন্য কেউ সুপারিশ করার ক্ষমতা রাখবে না।

৮৮

وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱلرَّحْمَـٰنُ وَلَدًا

অর্থ: আর তারা বলে, ‘পরম করুণাময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’

৮৯

لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْـًٔا إِدًّا

অর্থ: অবশ্যই তোমরা এক জঘন্য বিষয়ের অবতারণা করেছ।

৯০

تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَٰتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ ٱلْأَرْضُ وَتَخِرُّ ٱلْجِبَالُ هَدًّا

অর্থ: এতে আসমানসমূহ ফেটে পড়ার, যমীন বিদীর্ণ হওয়ার এবং পাহাড়সমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হবে।

৯১

أَن دَعَوْا۟ لِلرَّحْمَـٰنِ وَلَدًا

অর্থ: কারণ তারা পরম করুণাময়ের সন্তান আছে বলে দাবী করে।

৯২

وَمَا يَنۢبَغِى لِلرَّحْمَـٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا

অর্থ: অথচ সন্তান গ্রহণ করা পরম করুণাময়ের জন্য শোভনীয় নয়।

৯৩

إِن كُلُّ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ إِلَّآ ءَاتِى ٱلرَّحْمَـٰنِ عَبْدًا

অর্থ: আসমান ও যমীনে এমন কেউ নেই, যে বান্দা হিসেবে পরম করুণাময়ের কাছে হাযির হবে না।

৯৪

لَّقَدْ أَحْصَىٰهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا

অর্থ: তিনি তাদের সংখ্যা জানেন এবং তাদেরকে যথাযথভাবে গণনা করে রেখেছেন।

৯৫

وَكُلُّهُمْ ءَاتِيهِ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ فَرْدًا

অর্থ: আর কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর কাছে আসবে একাকী।

৯৬

إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ ٱلرَّحْمَـٰنُ وُدًّا

অর্থ: নিশ্চয় যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে পরম করুণাময় অবশ্যই তাদের জন্য (বান্দাদের হৃদয়ে) ভালবাসা সৃষ্টি করবেন।

৯৭

فَإِنَّمَا يَسَّرْنَـٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ ٱلْمُتَّقِينَ وَتُنذِرَ بِهِۦ قَوْمًا لُّدًّا

অর্থ: আর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি এর দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং কলহপ্রিয় কওমকে তদ্বারা সতর্ক করতে পার।

৯৮

وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هَلْ تُحِسُّ مِنْهُم مِّنْ أَحَدٍ أَوْ تَسْمَعُ لَهُمْ رِكْزًۢا

অর্থ: আর তাদের পূর্বে কত প্রজন্মকে আমি ধ্বংস করেছি! তুমি কি তাদের কাউকে দেখতে পাও, কিংবা শুনতে পাও তাদের কোন ক্ষীণ আওয়াজ?

১৯ . মারইয়াম - (مريم) | মারইয়াম (ঈসা নবীর মা)

makkah, মোট আয়াতঃ ৯৮

١ كٓهيعٓصٓ ٢ ذِكْرُ رَحْمَتِ رَبِّكَ عَبْدَهُۥ زَكَرِيَّآ ٣ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥ نِدَآءً خَفِيًّا ٤ قَالَ رَبِّ إِنِّى وَهَنَ ٱلْعَظْمُ مِنِّى وَٱشْتَعَلَ ٱلرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُنۢ بِدُعَآئِكَ رَبِّ شَقِيًّا ٥ وَإِنِّى خِفْتُ ٱلْمَوَٰلِىَ مِن وَرَآءِى وَكَانَتِ ٱمْرَأَتِى عَاقِرًا فَهَبْ لِى مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا ٦ يَرِثُنِى وَيَرِثُ مِنْ ءَالِ يَعْقُوبَ ۖ وَٱجْعَلْهُ رَبِّ رَضِيًّا ٧ يَـٰزَكَرِيَّآ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَـٰمٍ ٱسْمُهُۥ يَحْيَىٰ لَمْ نَجْعَل لَّهُۥ مِن قَبْلُ سَمِيًّا ٨ قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَـٰمٌ وَكَانَتِ ٱمْرَأَتِى عَاقِرًا وَقَدْ بَلَغْتُ مِنَ ٱلْكِبَرِ عِتِيًّا ٩ قَالَ كَذَٰلِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌ وَقَدْ خَلَقْتُكَ مِن قَبْلُ وَلَمْ تَكُ شَيْـًٔا ١٠ قَالَ رَبِّ ٱجْعَل لِّىٓ ءَايَةً ۚ قَالَ ءَايَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَ لَيَالٍ سَوِيًّا ١١ فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوْمِهِۦ مِنَ ٱلْمِحْرَابِ فَأَوْحَىٰٓ إِلَيْهِمْ أَن سَبِّحُوا۟ بُكْرَةً وَعَشِيًّا ١٢ يَـٰيَحْيَىٰ خُذِ ٱلْكِتَـٰبَ بِقُوَّةٍ ۖ وَءَاتَيْنَـٰهُ ٱلْحُكْمَ صَبِيًّا ١٣ وَحَنَانًا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَوٰةً ۖ وَكَانَ تَقِيًّا ١٤ وَبَرًّۢا بِوَٰلِدَيْهِ وَلَمْ يَكُن جَبَّارًا عَصِيًّا ١٥ وَسَلَـٰمٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا ١٦ وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ مَرْيَمَ إِذِ ٱنتَبَذَتْ مِنْ أَهْلِهَا مَكَانًا شَرْقِيًّا ١٧ فَٱتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَآ إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا ١٨ قَالَتْ إِنِّىٓ أَعُوذُ بِٱلرَّحْمَـٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا ١٩ قَالَ إِنَّمَآ أَنَا۠ رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَـٰمًا زَكِيًّا ٢٠ قَالَتْ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَـٰمٌ وَلَمْ يَمْسَسْنِى بَشَرٌ وَلَمْ أَكُ بَغِيًّا ٢١ قَالَ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌ ۖ وَلِنَجْعَلَهُۥٓ ءَايَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا ٢٢ ۞ فَحَمَلَتْهُ فَٱنتَبَذَتْ بِهِۦ مَكَانًا قَصِيًّا ٢٣ فَأَجَآءَهَا ٱلْمَخَاضُ إِلَىٰ جِذْعِ ٱلنَّخْلَةِ قَالَتْ يَـٰلَيْتَنِى مِتُّ قَبْلَ هَـٰذَا وَكُنتُ نَسْيًا مَّنسِيًّا ٢٤ فَنَادَىٰهَا مِن تَحْتِهَآ أَلَّا تَحْزَنِى قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِيًّا ٢٥ وَهُزِّىٓ إِلَيْكِ بِجِذْعِ ٱلنَّخْلَةِ تُسَـٰقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا ٢٦ فَكُلِى وَٱشْرَبِى وَقَرِّى عَيْنًا ۖ فَإِمَّا تَرَيِنَّ مِنَ ٱلْبَشَرِ أَحَدًا فَقُولِىٓ إِنِّى نَذَرْتُ لِلرَّحْمَـٰنِ صَوْمًا فَلَنْ أُكَلِّمَ ٱلْيَوْمَ إِنسِيًّا ٢٧ فَأَتَتْ بِهِۦ قَوْمَهَا تَحْمِلُهُۥ ۖ قَالُوا۟ يَـٰمَرْيَمُ لَقَدْ جِئْتِ شَيْـًٔا فَرِيًّا ٢٨ يَـٰٓأُخْتَ هَـٰرُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ ٱمْرَأَ سَوْءٍ وَمَا كَانَتْ أُمُّكِ بَغِيًّا ٢٩ فَأَشَارَتْ إِلَيْهِ ۖ قَالُوا۟ كَيْفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِى ٱلْمَهْدِ صَبِيًّا ٣٠ قَالَ إِنِّى عَبْدُ ٱللَّهِ ءَاتَىٰنِىَ ٱلْكِتَـٰبَ وَجَعَلَنِى نَبِيًّا ٣١ وَجَعَلَنِى مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنتُ وَأَوْصَـٰنِى بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ مَا دُمْتُ حَيًّا ٣٢ وَبَرًّۢا بِوَٰلِدَتِى وَلَمْ يَجْعَلْنِى جَبَّارًا شَقِيًّا ٣٣ وَٱلسَّلَـٰمُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا ٣٤ ذَٰلِكَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ ۚ قَوْلَ ٱلْحَقِّ ٱلَّذِى فِيهِ يَمْتَرُونَ ٣٥ مَا كَانَ لِلَّهِ أَن يَتَّخِذَ مِن وَلَدٍ ۖ سُبْحَـٰنَهُۥٓ ۚ إِذَا قَضَىٰٓ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٣٦ وَإِنَّ ٱللَّهَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۚ هَـٰذَا صِرَٰطٌ مُّسْتَقِيمٌ ٣٧ فَٱخْتَلَفَ ٱلْأَحْزَابُ مِنۢ بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن مَّشْهَدِ يَوْمٍ عَظِيمٍ ٣٨ أَسْمِعْ بِهِمْ وَأَبْصِرْ يَوْمَ يَأْتُونَنَا ۖ لَـٰكِنِ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٱلْيَوْمَ فِى ضَلَـٰلٍ مُّبِينٍ ٣٩ وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ ٱلْحَسْرَةِ إِذْ قُضِىَ ٱلْأَمْرُ وَهُمْ فِى غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ ٤٠ إِنَّا نَحْنُ نَرِثُ ٱلْأَرْضَ وَمَنْ عَلَيْهَا وَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ ٤١ وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِبْرَٰهِيمَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا ٤٢ إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَـٰٓأَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِى عَنكَ شَيْـًٔا ٤٣ يَـٰٓأَبَتِ إِنِّى قَدْ جَآءَنِى مِنَ ٱلْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَٱتَّبِعْنِىٓ أَهْدِكَ صِرَٰطًا سَوِيًّا ٤٤ يَـٰٓأَبَتِ لَا تَعْبُدِ ٱلشَّيْطَـٰنَ ۖ إِنَّ ٱلشَّيْطَـٰنَ كَانَ لِلرَّحْمَـٰنِ عَصِيًّا ٤٥ يَـٰٓأَبَتِ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ ٱلرَّحْمَـٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّيْطَـٰنِ وَلِيًّا ٤٦ قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنْ ءَالِهَتِى يَـٰٓإِبْرَٰهِيمُ ۖ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ ۖ وَٱهْجُرْنِى مَلِيًّا ٤٧ قَالَ سَلَـٰمٌ عَلَيْكَ ۖ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّىٓ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ بِى حَفِيًّا ٤٨ وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَأَدْعُوا۟ رَبِّى عَسَىٰٓ أَلَّآ أَكُونَ بِدُعَآءِ رَبِّى شَقِيًّا ٤٩ فَلَمَّا ٱعْتَزَلَهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَهَبْنَا لَهُۥٓ إِسْحَـٰقَ وَيَعْقُوبَ ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا نَبِيًّا ٥٠ وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا ٥١ وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ مُوسَىٰٓ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخْلَصًا وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا ٥٢ وَنَـٰدَيْنَـٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلْأَيْمَنِ وَقَرَّبْنَـٰهُ نَجِيًّا ٥٣ وَوَهَبْنَا لَهُۥ مِن رَّحْمَتِنَآ أَخَاهُ هَـٰرُونَ نَبِيًّا ٥٤ وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِسْمَـٰعِيلَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صَادِقَ ٱلْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا ٥٥ وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُۥ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِۦ مَرْضِيًّا ٥٦ وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ إِدْرِيسَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا ٥٧ وَرَفَعْنَـٰهُ مَكَانًا عَلِيًّا ٥٨ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ مِن ذُرِّيَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْرَٰٓءِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَٱجْتَبَيْنَآ ۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتُ ٱلرَّحْمَـٰنِ خَرُّوا۟ سُجَّدًا وَبُكِيًّا ۩ ٥٩ ۞ فَخَلَفَ مِنۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُوا۟ ٱلشَّهَوَٰتِ ۖ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ٦٠ إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحًا فَأُو۟لَـٰٓئِكَ يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ شَيْـًٔا ٦١ جَنَّـٰتِ عَدْنٍ ٱلَّتِى وَعَدَ ٱلرَّحْمَـٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعْدُهُۥ مَأْتِيًّا ٦٢ لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَـٰمًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا ٦٣ تِلْكَ ٱلْجَنَّةُ ٱلَّتِى نُورِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِيًّا ٦٤ وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ ۖ لَهُۥ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَٰلِكَ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا ٦٥ رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَٱعْبُدْهُ وَٱصْطَبِرْ لِعِبَـٰدَتِهِۦ ۚ هَلْ تَعْلَمُ لَهُۥ سَمِيًّا ٦٦ وَيَقُولُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَءِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ أُخْرَجُ حَيًّا ٦٧ أَوَلَا يَذْكُرُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَنَّا خَلَقْنَـٰهُ مِن قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْـًٔا ٦٨ فَوَرَبِّكَ لَنَحْشُرَنَّهُمْ وَٱلشَّيَـٰطِينَ ثُمَّ لَنُحْضِرَنَّهُمْ حَوْلَ جَهَنَّمَ جِثِيًّا ٦٩ ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِيعَةٍ أَيُّهُمْ أَشَدُّ عَلَى ٱلرَّحْمَـٰنِ عِتِيًّا ٧٠ ثُمَّ لَنَحْنُ أَعْلَمُ بِٱلَّذِينَ هُمْ أَوْلَىٰ بِهَا صِلِيًّا ٧١ وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا ٧٢ ثُمَّ نُنَجِّى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوا۟ وَّنَذَرُ ٱلظَّـٰلِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا ٧٣ وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتُنَا بَيِّنَـٰتٍ قَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَىُّ ٱلْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَامًا وَأَحْسَنُ نَدِيًّا ٧٤ وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَحْسَنُ أَثَـٰثًا وَرِءْيًا ٧٥ قُلْ مَن كَانَ فِى ٱلضَّلَـٰلَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ ٱلرَّحْمَـٰنُ مَدًّا ۚ حَتَّىٰٓ إِذَا رَأَوْا۟ مَا يُوعَدُونَ إِمَّا ٱلْعَذَابَ وَإِمَّا ٱلسَّاعَةَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضْعَفُ جُندًا ٧٦ وَيَزِيدُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ٱهْتَدَوْا۟ هُدًى ۗ وَٱلْبَـٰقِيَـٰتُ ٱلصَّـٰلِحَـٰتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ مَّرَدًّا ٧٧ أَفَرَءَيْتَ ٱلَّذِى كَفَرَ بِـَٔايَـٰتِنَا وَقَالَ لَأُوتَيَنَّ مَالًا وَوَلَدًا ٧٨ أَطَّلَعَ ٱلْغَيْبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا ٧٩ كَلَّا ۚ سَنَكْتُبُ مَا يَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُۥ مِنَ ٱلْعَذَابِ مَدًّا ٨٠ وَنَرِثُهُۥ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا ٨١ وَٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ ءَالِهَةً لِّيَكُونُوا۟ لَهُمْ عِزًّا ٨٢ كَلَّا ۚ سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا ٨٣ أَلَمْ تَرَ أَنَّآ أَرْسَلْنَا ٱلشَّيَـٰطِينَ عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ تَؤُزُّهُمْ أَزًّا ٨٤ فَلَا تَعْجَلْ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا ٨٥ يَوْمَ نَحْشُرُ ٱلْمُتَّقِينَ إِلَى ٱلرَّحْمَـٰنِ وَفْدًا ٨٦ وَنَسُوقُ ٱلْمُجْرِمِينَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرْدًا ٨٧ لَّا يَمْلِكُونَ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَنِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا ٨٨ وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱلرَّحْمَـٰنُ وَلَدًا ٨٩ لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْـًٔا إِدًّا ٩٠ تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَٰتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ ٱلْأَرْضُ وَتَخِرُّ ٱلْجِبَالُ هَدًّا ٩١ أَن دَعَوْا۟ لِلرَّحْمَـٰنِ وَلَدًا ٩٢ وَمَا يَنۢبَغِى لِلرَّحْمَـٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا ٩٣ إِن كُلُّ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ إِلَّآ ءَاتِى ٱلرَّحْمَـٰنِ عَبْدًا ٩٤ لَّقَدْ أَحْصَىٰهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا ٩٥ وَكُلُّهُمْ ءَاتِيهِ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ فَرْدًا ٩٦ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ ٱلرَّحْمَـٰنُ وُدًّا ٩٧ فَإِنَّمَا يَسَّرْنَـٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ ٱلْمُتَّقِينَ وَتُنذِرَ بِهِۦ قَوْمًا لُّدًّا ٩٨ وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هَلْ تُحِسُّ مِنْهُم مِّنْ أَحَدٍ أَوْ تَسْمَعُ لَهُمْ رِكْزًۢا