৫০ . ক্বাফ - (ق) | ক্বাফ
makkah, মোট আয়াতঃ ৪৫
بَلْ عَجِبُوٓا۟ أَن جَآءَهُم مُّنذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ ٱلْكَـٰفِرُونَ هَـٰذَا شَىْءٌ عَجِيبٌ
অর্থ: বরং তারা বিস্মিত হয়েছে যে, তাদের মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী তাদের কাছে এসেছে। অতঃপর কাফিররা বলল, ‘এতো এক বিস্ময়কর বস্তু’!
أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا ۖ ذَٰلِكَ رَجْعٌۢ بَعِيدٌ
অর্থ: ‘আমরা যখন মারা যাব এবং মাটিতে পরিণত হব তখনো কি (আমরা পুনরুত্থিত হব)? এ ফিরে যাওয়া সুদূরপরাহত’।
قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنقُصُ ٱلْأَرْضُ مِنْهُمْ ۖ وَعِندَنَا كِتَـٰبٌ حَفِيظٌۢ
অর্থ: অবশ্যই আমি জানি মাটি তাদের থেকে যতটুকু ক্ষয় করে। আর আমার কাছে আছে অধিক সংরক্ষণকারী কিতাব।
بَلْ كَذَّبُوا۟ بِٱلْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ فَهُمْ فِىٓ أَمْرٍ مَّرِيجٍ
অর্থ: বরং তারা সত্যকে অস্বীকার করেছে, যখনই তাদের কাছে সত্য এসেছে। অতএব তারা সংশয়যুক্ত বিষয়ের মধ্যে রয়েছে।
أَفَلَمْ يَنظُرُوٓا۟ إِلَى ٱلسَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَـٰهَا وَزَيَّنَّـٰهَا وَمَا لَهَا مِن فُرُوجٍ
অর্থ: তারা কি তাদের উপরে আসমানের দিকে তাকায় না, কিভাবে আমি তা বানিয়েছি এবং তা সুশোভিত করেছি? আর তাতে কোন ফাটল নেই।
وَٱلْأَرْضَ مَدَدْنَـٰهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِيجٍ
অর্থ: আর আমি যমীনকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক প্রকারের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদগত করেছি।
تَبْصِرَةً وَذِكْرَىٰ لِكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ
অর্থ: আল্লাহ অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ হিসেবে।
وَنَزَّلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً مُّبَـٰرَكًا فَأَنۢبَتْنَا بِهِۦ جَنَّـٰتٍ وَحَبَّ ٱلْحَصِيدِ
অর্থ: আর আমি আসমান থেকে বরকতময় পানি নাযিল করেছি। অতঃপর তা দ্বারা আমি উৎপন্ন করি বাগ-বাগিচা ও কর্তনযোগ্য শস্যদানা।
وَٱلنَّخْلَ بَاسِقَـٰتٍ لَّهَا طَلْعٌ نَّضِيدٌ
অর্থ: আর সমুন্নত খেজুরগাছ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর ছড়া,
رِّزْقًا لِّلْعِبَادِ ۖ وَأَحْيَيْنَا بِهِۦ بَلْدَةً مَّيْتًا ۚ كَذَٰلِكَ ٱلْخُرُوجُ
অর্থ: আমার বান্দাদের জন্য রিয্কস্বরূপ। আর আমি পানি দ্বারা মৃত শহর সঞ্জীবিত করি। এভাবেই উত্থান ঘটবে।
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَأَصْحَـٰبُ ٱلرَّسِّ وَثَمُودُ
অর্থ: তাদের পূর্বে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল নূহের সম্প্রদায়, রাস্ এর অধিবাসী ও সামূদ সম্প্রদায়।
وَأَصْحَـٰبُ ٱلْأَيْكَةِ وَقَوْمُ تُبَّعٍ ۚ كُلٌّ كَذَّبَ ٱلرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِيدِ
অর্থ: আইকার অধিবাসী ও তুব্বা‘ সম্প্রদায়। সকলেই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল।
أَفَعَيِينَا بِٱلْخَلْقِ ٱلْأَوَّلِ ۚ بَلْ هُمْ فِى لَبْسٍ مِّنْ خَلْقٍ جَدِيدٍ
অর্থ: আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি? বরং তারা নতুন সৃষ্টির বিষয়ে সন্দেহে নিপতিত।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَـٰنَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِۦ نَفْسُهُۥ ۖ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ ٱلْوَرِيدِ
অর্থ: আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তাও আমি জানি। আর আমি* তার গলার ধমনী হতেও অধিক কাছে। * ইবনে কাসীর বলেন, এখানে نحن বলে আল্লাহর ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে।
إِذْ يَتَلَقَّى ٱلْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ ٱلْيَمِينِ وَعَنِ ٱلشِّمَالِ قَعِيدٌ
অর্থ: যখন ডানে ও বামে বসা দু’জন লিপিবদ্ধকারী পরস্পর গ্রহণ করবে।
مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
অর্থ: সে যে কথাই উচ্চারণ করে তার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে।
وَجَآءَتْ سَكْرَةُ ٱلْمَوْتِ بِٱلْحَقِّ ۖ ذَٰلِكَ مَا كُنتَ مِنْهُ تَحِيدُ
অর্থ: আর মৃত্যুর যন্ত্রণা যথাযথই আসবে। যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।
وَنُفِخَ فِى ٱلصُّورِ ۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْوَعِيدِ
অর্থ: আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে। এটাই হল প্রতিশ্রুত দিন।
وَجَآءَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّعَهَا سَآئِقٌ وَشَهِيدٌ
অর্থ: আর প্রত্যেক ব্যক্তি উপস্থিত হবে, তার সাথে থাকবে একজন চালক ও একজন সাক্ষী।
لَّقَدْ كُنتَ فِى غَفْلَةٍ مِّنْ هَـٰذَا فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَآءَكَ فَبَصَرُكَ ٱلْيَوْمَ حَدِيدٌ
অর্থ: অবশ্যই তুমি এ দিবস সম্পর্কে উদাসীন ছিলে, অতএব আমি তোমার পর্দা তোমার থেকে উন্মোচন করে দিলাম। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি খুব প্রখর।
وَقَالَ قَرِينُهُۥ هَـٰذَا مَا لَدَىَّ عَتِيدٌ
অর্থ: আর তার সাথী (ফেরেশতা) বলবে, এই তো আমার কাছে (আমল নামা) প্রস্তুত।
أَلْقِيَا فِى جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِيدٍ
অর্থ: তোমরা জাহান্নামে নিক্ষেপ কর প্রত্যেক উদ্ধত কাফিরকে,
مَّنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ مُّرِيبٍ
অর্থ: কল্যাণকর কাজে প্রবল বাধাদানকারী সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে।
ٱلَّذِى جَعَلَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ فَأَلْقِيَاهُ فِى ٱلْعَذَابِ ٱلشَّدِيدِ
অর্থ: যে আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ গ্রহণ করেছিল, তোমরা তাকে কঠিন আযাবে নিক্ষেপ কর।
۞ قَالَ قَرِينُهُۥ رَبَّنَا مَآ أَطْغَيْتُهُۥ وَلَـٰكِن كَانَ فِى ضَلَـٰلٍۭ بَعِيدٍ
অর্থ: তার সঙ্গী (শয়তান) বলবে, ‘হে আমাদের ‘রব’, আমি তাকে বিদ্রোহী করে তুলিনি, বরং সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রষ্টতার মধ্যে’।
قَالَ لَا تَخْتَصِمُوا۟ لَدَىَّ وَقَدْ قَدَّمْتُ إِلَيْكُم بِٱلْوَعِيدِ
অর্থ: আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা আমার কাছে বাক-বিতন্ডা করো না। অবশ্যই আমি পূর্বেই তোমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম’।
مَا يُبَدَّلُ ٱلْقَوْلُ لَدَىَّ وَمَآ أَنَا۠ بِظَلَّـٰمٍ لِّلْعَبِيدِ
অর্থ: ‘আমার কাছে কথা রদবদল হয় না, আর আমি বান্দার প্রতি যুলমকারীও নই’।
يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ ٱمْتَلَأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِن مَّزِيدٍ
অর্থ: সেদিন আমি জাহান্নামকে বলব, ‘তুমি কি পরিপূর্ণ হয়েছ’? আর সে বলবে, ‘আরো বেশি আছে কি’?
وَأُزْلِفَتِ ٱلْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ
অর্থ: আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের অদূরে, কাছেই আনা হবে।
هَـٰذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ
অর্থ: এটাই, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল। প্রত্যেক আল্লাহ অভিমুখী অধিক সংরক্ষণশীলদের জন্য।
مَّنْ خَشِىَ ٱلرَّحْمَـٰنَ بِٱلْغَيْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِيبٍ
অর্থ: যে না দেখেই রহমানকে ভয় করত এবং বিনীত হৃদয়ে উপস্থিত হত।
ٱدْخُلُوهَا بِسَلَـٰمٍ ۖ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْخُلُودِ
অর্থ: তোমরা তাতে শান্তির সাথে প্রবেশ কর। এটাই স্থায়িত্বের দিন।
لَهُم مَّا يَشَآءُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ
অর্থ: তারা যা চাইবে, সেখানে তাদের জন্য তাই থাকবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরও অধিক।
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَشَدُّ مِنْهُم بَطْشًا فَنَقَّبُوا۟ فِى ٱلْبِلَـٰدِ هَلْ مِن مَّحِيصٍ
অর্থ: আমি তাদের পূর্বে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিয়েছি যারা পাকড়াও করার ক্ষেত্রে এদের তুলনায় ছিল প্রবলতর, তারা দেশ-বিদেশ চষে বেড়াত। তাদের কি কোন পলায়নস্থল ছিল?
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَذِكْرَىٰ لِمَن كَانَ لَهُۥ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى ٱلسَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ
অর্থ: নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে নিবিষ্টচিত্তে শ্রবণ করে।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ
অর্থ: আর অবশ্যই আমি আসমানসমূহ ও যমীন এবং এতদোভয়ের মধ্যস্থিত সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি। আর আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।
فَٱصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ ٱلشَّمْسِ وَقَبْلَ ٱلْغُرُوبِ
অর্থ: অতএব এরা যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্যধারণ কর এবং সূর্য উদয়ের পূর্বে ও অস্তমিত হওয়ার পূর্বে তুমি তোমার রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ কর।
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَأَدْبَـٰرَ ٱلسُّجُودِ
অর্থ: এবং রাতের একাংশেও তুমি তাঁর তাসবীহ পাঠ কর এবং সালাতের পশ্চাতেও।
وَٱسْتَمِعْ يَوْمَ يُنَادِ ٱلْمُنَادِ مِن مَّكَانٍ قَرِيبٍ
অর্থ: মনোনিবেশ কর, যেদিন একজন ঘোষক নিকটবর্তী কোন স্থান থেকে ডাকতে থাকবে।
يَوْمَ يَسْمَعُونَ ٱلصَّيْحَةَ بِٱلْحَقِّ ۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْخُرُوجِ
অর্থ: সেদিন তারা সত্যিসত্যিই মহাচিৎকার শুনবে। সেটিই উত্থিত হবার দিন।
إِنَّا نَحْنُ نُحْىِۦ وَنُمِيتُ وَإِلَيْنَا ٱلْمَصِيرُ
অর্থ: আমিই জীবন দেই এবং আমিই মৃত্যু ঘটাই, আর আমার দিকেই চূড়ান্ত প্রত্যাবর্তন।
يَوْمَ تَشَقَّقُ ٱلْأَرْضُ عَنْهُمْ سِرَاعًا ۚ ذَٰلِكَ حَشْرٌ عَلَيْنَا يَسِيرٌ
অর্থ: সেদিন তাদের থেকে যমীন বিদীর্ণ হবে এবং লোকেরা দিগ্বিদিক্ ছুটাছুটি করতে থাকবে। এটি এমন এক সমাবেশ যা আমার পক্ষে অতীব সহজ।