২১ . আল আম্বিয়া - (الأنبياء) | নবীগণ (আঃ)
makkah, মোট আয়াতঃ ১১২
ٱقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِى غَفْلَةٍ مُّعْرِضُونَ
অর্থ: মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।
مَا يَأْتِيهِم مِّن ذِكْرٍ مِّن رَّبِّهِم مُّحْدَثٍ إِلَّا ٱسْتَمَعُوهُ وَهُمْ يَلْعَبُونَ
অর্থ: যখনই তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের নিকট কোন নতুন উপদেশ আসে তখন তারা তা কৌতুকভরে শ্রবণ করে।
لَاهِيَةً قُلُوبُهُمْ ۗ وَأَسَرُّوا۟ ٱلنَّجْوَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ هَلْ هَـٰذَآ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ ۖ أَفَتَأْتُونَ ٱلسِّحْرَ وَأَنتُمْ تُبْصِرُونَ
অর্থ: তাদের অন্তর থাকে অমনোযোগী এবং যালিমরা গোপনে পরামর্শ করে, ‘এ তো তোমাদের মতই একজন মানুষ। এরপরও কি তোমরা দেখে শুনে যাদুর কবলে পড়বে’?
قَالَ رَبِّى يَعْلَمُ ٱلْقَوْلَ فِى ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
অর্থ: সে (রাসূল) বলল, ‘আমার রব আসমান ও যমীনের সমস্ত কথাই জানেন এবং তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ’।
بَلْ قَالُوٓا۟ أَضْغَـٰثُ أَحْلَـٰمٍۭ بَلِ ٱفْتَرَىٰهُ بَلْ هُوَ شَاعِرٌ فَلْيَأْتِنَا بِـَٔايَةٍ كَمَآ أُرْسِلَ ٱلْأَوَّلُونَ
অর্থ: বরং তারা বলে, ‘এগুলো অলীক কল্পনা, হয় সে এটি মন থেকে বানিয়েছে নয়তো সে একজন কবি। অতএব সে আমাদের কাছে এমন নিদর্শন নিয়ে আসুক যেরূপ নিদর্শনসহ প্রেরিত হয়েছিল পূর্ববর্তীগণ’।
مَآ ءَامَنَتْ قَبْلَهُم مِّن قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَـٰهَآ ۖ أَفَهُمْ يُؤْمِنُونَ
অর্থ: তাদের পূর্বে যে জনপদ ঈমান আনেনি তাদেরকে আমি ধ্বংস করেছি । তবে কি এরা ঈমান আনবে?
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِىٓ إِلَيْهِمْ ۖ فَسْـَٔلُوٓا۟ أَهْلَ ٱلذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
অর্থ: আর তোমার পূর্বে আমি পুরুষই পাঠিয়েছিলাম, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠাতাম। সুতরাং তোমরা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর যদি তোমরা না জান।
وَمَا جَعَلْنَـٰهُمْ جَسَدًا لَّا يَأْكُلُونَ ٱلطَّعَامَ وَمَا كَانُوا۟ خَـٰلِدِينَ
অর্থ: আর আমি তাদেরকে এমন দেহবিশিষ্ট করিনি যে, তারা খাদ্য গ্রহণ করত না, আর তারা স্থায়ীও ছিল না।
ثُمَّ صَدَقْنَـٰهُمُ ٱلْوَعْدَ فَأَنجَيْنَـٰهُمْ وَمَن نَّشَآءُ وَأَهْلَكْنَا ٱلْمُسْرِفِينَ
অর্থ: অতঃপর আমি তাদের প্রতি কৃত ওয়াদা পূর্ণ করলাম। আর আমি তাদেরকে ও যাদেরকে ইচ্ছা করি রক্ষা করলাম এবং সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ধ্বংস করে দিলাম।
لَقَدْ أَنزَلْنَآ إِلَيْكُمْ كِتَـٰبًا فِيهِ ذِكْرُكُمْ ۖ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
অর্থ: নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি এক কিতাব নাযিল করেছি, যাতে তোমাদের জন্য উপদেশ* রয়েছে, তবুও কি তোমরা বুঝবে না? * এ আয়াতে যিকর শব্দটি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হতে পারেঃ একটি উপদেশ আর অপরটি সম্মান ও মর্যাদা। অর্থাৎ যে এ কুরআন শিক্ষা করে এবং তদনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে সেই মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী হবে।
وَكَمْ قَصَمْنَا مِن قَرْيَةٍ كَانَتْ ظَالِمَةً وَأَنشَأْنَا بَعْدَهَا قَوْمًا ءَاخَرِينَ
অর্থ: আমি কত জনবসতিকে ধ্বংস করেছি যারা ছিল যালিম এবং তাদের পর অন্য জাতি সৃষ্টি করেছি।
فَلَمَّآ أَحَسُّوا۟ بَأْسَنَآ إِذَا هُم مِّنْهَا يَرْكُضُونَ
অর্থ: অতঃপর তারা যখন আমার আযাব দেখল তখনই তারা জনপদ ছেড়ে পালাতে লাগল।
لَا تَرْكُضُوا۟ وَٱرْجِعُوٓا۟ إِلَىٰ مَآ أُتْرِفْتُمْ فِيهِ وَمَسَـٰكِنِكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْـَٔلُونَ
অর্থ: (তাদেরকে বলা হল) ‘পলায়ন করো না, বরং তোমাদের ভোগ-বিলাসিতায় এবং ঘরবাড়িতে ফিরে যাও, যেন তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়’।
قَالُوا۟ يَـٰوَيْلَنَآ إِنَّا كُنَّا ظَـٰلِمِينَ
অর্থ: তারা বলল, ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমরা তো অবশ্যই যালিম ছিলাম।’
فَمَا زَالَت تِّلْكَ دَعْوَىٰهُمْ حَتَّىٰ جَعَلْنَـٰهُمْ حَصِيدًا خَـٰمِدِينَ
অর্থ: অতঃপর তাদের এই বিলাপ চলতে থাকে আমি তাদেরকে কেটে ফেলা শস্য ও নিভে যাওয়া আগুন সদৃশ না করা পর্যন্ত।
وَمَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَآءَ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَـٰعِبِينَ
অর্থ: আসমান-যমীন ও তাদের মাঝখানে যা কিছু আছে তার কোন কিছুই আমি খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।
لَوْ أَرَدْنَآ أَن نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّٱتَّخَذْنَـٰهُ مِن لَّدُنَّآ إِن كُنَّا فَـٰعِلِينَ
অর্থ: আমি যদি খেলার উপকরণ গ্রহণ করতে চাইতাম, তবে আমার কাছে যা আছে তা দিয়েই করতাম। কিন্তু আমি তা করিনি।
بَلْ نَقْذِفُ بِٱلْحَقِّ عَلَى ٱلْبَـٰطِلِ فَيَدْمَغُهُۥ فَإِذَا هُوَ زَاهِقٌ ۚ وَلَكُمُ ٱلْوَيْلُ مِمَّا تَصِفُونَ
অর্থ: বরং আমি মিথ্যার উপর সত্য নিক্ষেপ করি; ফলে তা মিথ্যাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয় এবং নিমিষেই তা বিলুপ্ত হয়। আর তোমাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ তোমরা যা বলছ তার জন্য ।
وَلَهُۥ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ وَمَنْ عِندَهُۥ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِۦ وَلَا يَسْتَحْسِرُونَ
অর্থ: আর আসমান-যমীনে যারা আছে তারা সবাই তাঁর; আর তাঁর কাছে যারা আছে তারা অহঙ্কারবশতঃ তাঁর ইবাদাত হতে বিমুখ হয় না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না।
يُسَبِّحُونَ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ لَا يَفْتُرُونَ
অর্থ: তারা দিন-রাত তাঁর তাসবীহ পাঠ করে, তারা শিথিলতা দেখায় না।
أَمِ ٱتَّخَذُوٓا۟ ءَالِهَةً مِّنَ ٱلْأَرْضِ هُمْ يُنشِرُونَ
অর্থ: তারা যেসব মাটির দেবতা গ্রহণ করেছে, সেগুলি কি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম?
لَوْ كَانَ فِيهِمَآ ءَالِهَةٌ إِلَّا ٱللَّهُ لَفَسَدَتَا ۚ فَسُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ رَبِّ ٱلْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ
অর্থ: যদি আসমান ও যমীনে আল্লাহ ছাড়া বহু ইলাহ থাকত তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত, সুতরাং তারা যা বলে, আরশের রব আল্লাহ তা থেকে পবিত্র।
لَا يُسْـَٔلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْـَٔلُونَ
অর্থ: তিনি যা করেন সে ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না; বরং তাদেরকেই প্রশ্ন করা হবে।
أَمِ ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةً ۖ قُلْ هَاتُوا۟ بُرْهَـٰنَكُمْ ۖ هَـٰذَا ذِكْرُ مَن مَّعِىَ وَذِكْرُ مَن قَبْلِى ۗ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ٱلْحَقَّ ۖ فَهُم مُّعْرِضُونَ
অর্থ: তারা কি তাঁকে ছাড়া অনেক ইলাহ গ্রহণ করেছে? বল, ‘তোমাদের প্রমাণ নিয়ে আস। আমার সাথে যারা আছে এটি তাদের জন্য উপদেশ এবং আমার পূর্বে যারা ছিল তাদের জন্যও এটাই ছিল উপদেশ।’ কিন্তু তাদের বেশীরভাগই প্রকৃত সত্যকে জানে না; তাই তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِىٓ إِلَيْهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعْبُدُونِ
অর্থ: আর তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল আমি পাঠাইনি যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত কর।’
وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱلرَّحْمَـٰنُ وَلَدًا ۗ سُبْحَـٰنَهُۥ ۚ بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ
অর্থ: আর তারা বলে, ‘পরম করুণাময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’ তিনি পবিত্র। বরং তারা* সম্মানিত বান্দা। * বনূ খুযা‘আ দাবী করত, ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা। এ ভুল ধারণা দূর করতে আল্লাহ বলেন, ফেরেশতারা আল্লাহর সন্তান নয়; বরং তারা সম্মানিত বান্দা। আল-কাশ্শাফ
لَا يَسْبِقُونَهُۥ بِٱلْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِۦ يَعْمَلُونَ
অর্থ: তারা তাঁর আগ বাড়িয়ে কোন কথা বলে না, তাঁর নির্দেশেই তো তারা কাজ করে।
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ٱرْتَضَىٰ وَهُم مِّنْ خَشْيَتِهِۦ مُشْفِقُونَ
অর্থ: তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন। আর তারা শুধু তাদের জন্যই সুপারিশ করে যাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট। তারা তাঁর ভয়ে ভীত।* * ফেরেশতারা আল্লাহর ভয়ে সর্বদা ভীত থাকে।
۞ وَمَن يَقُلْ مِنْهُمْ إِنِّىٓ إِلَـٰهٌ مِّن دُونِهِۦ فَذَٰلِكَ نَجْزِيهِ جَهَنَّمَ ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّـٰلِمِينَ
অর্থ: আর তাদের মধ্যে যে-ই বলবে, ‘তিনি ছাড়া আমি ইলাহ’, তাকেই আমি প্রতিদান হিসেবে জাহান্নাম দেব; এভাবেই আমি যালিমদের আযাব দিয়ে থাকি।
أَوَلَمْ يَرَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَنَّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَـٰهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ كُلَّ شَىْءٍ حَىٍّ ۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ
অর্থ: যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আসমানসমূহ ও যমীন ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল*, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম, আর আমি সকল প্রাণবান জিনিসকে পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। তবুও কি তারা ঈমান আনবে না? * আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে আদিতে আকাশ, সূর্য, নক্ষত্র ও পৃথিবী ইত্যাদি পৃথক সত্তায় ছিল না; বরং সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। তখন মহাবিশ্ব ছিল অসংখ্য গ্যাসীয় কণার সমষ্টি। পরবর্তীকালে মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে নক্ষত্র, সূর্য, পৃথিবী ও গ্রহসমূহ সৃষ্টি হয়। এটিই বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ থিওরী।
وَجَعَلْنَا فِى ٱلْأَرْضِ رَوَٰسِىَ أَن تَمِيدَ بِهِمْ وَجَعَلْنَا فِيهَا فِجَاجًا سُبُلًا لَّعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ
অর্থ: আর আমি যমীনে সৃষ্টি করেছি সুদৃঢ় পর্বত, যেন তা পর্বতসমূহ নিয়ে একদিকে হেলে না পড়ে*, আর আমি তাতে তৈরী করেছি প্রশস্ত রাস্তা, যেন তারা চলতে পারে। * আধুনিক ভূ-তত্ত্ববিদগণ বলেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ উত্তপ্ত গলিত পদার্থের তাপ ছড়ানোর কারণে পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ সঙ্কুচিত হয়ে তাতে ভাঁজ সৃষ্টি হয় এবং তার উপরের অংশই হল পর্বত। পর্বতমালা পৃথিবী-পৃষ্ঠের ভারসাম্য রক্ষা করে।
وَجَعَلْنَا ٱلسَّمَآءَ سَقْفًا مَّحْفُوظًا ۖ وَهُمْ عَنْ ءَايَـٰتِهَا مُعْرِضُونَ
অর্থ: আর আমি আসমানকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ; কিন্তু তারা তার নিদর্শনাবলী হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
وَهُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ ۖ كُلٌّ فِى فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
অর্থ: আর তিনিই রাত ও দিন এবং সূর্য ও চাঁদ সৃষ্টি করেছেন; সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করে।
وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ ٱلْخُلْدَ ۖ أَفَإِي۟ن مِّتَّ فَهُمُ ٱلْخَـٰلِدُونَ
অর্থ: আর তোমার পূর্বে কোন মানুষকে আমি স্থায়ী জীবন দান করিনি; সুতরাং তোমার মৃত্যু হলে তারা কি অনন্ত জীবনসম্পন্ন হয়ে থাকবে ?
كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ ٱلْمَوْتِ ۗ وَنَبْلُوكُم بِٱلشَّرِّ وَٱلْخَيْرِ فِتْنَةً ۖ وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
অর্থ: প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর ভাল ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।
وَإِذَا رَءَاكَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَـٰذَا ٱلَّذِى يَذْكُرُ ءَالِهَتَكُمْ وَهُم بِذِكْرِ ٱلرَّحْمَـٰنِ هُمْ كَـٰفِرُونَ
অর্থ: আর যারা কুফরী করে তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তোমাকে কেবল উপহাসের পাত্র হিসেবে গ্রহণ করে। তারা বলে, ‘এ কি সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের দেবতাদের সমালোচনা করে?’ অথচ তারাই ‘রহমান’-এর আলোচনার বিরোধিতা করে। * রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদের দেবতাদের অস্বীকার করতেন বলে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমালোচনা করত। আবার তাঁরাই একমাত্র ইলাহ আল্লাহর গুণবাচক নাম ‘রহমান’ শব্দটি শুনতেই চাইতো না। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ের অজ্ঞতা ও স্ববিরোধিতা। আল-কুরতুবী।
خُلِقَ ٱلْإِنسَـٰنُ مِنْ عَجَلٍ ۚ سَأُو۟رِيكُمْ ءَايَـٰتِى فَلَا تَسْتَعْجِلُونِ
অর্থ: মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাড়াহুড়ার প্রবণতা দিয়ে। অচিরেই আমি তোমাদেরকে দেখাব আমার নিদর্শনাবলী। সুতরাং তোমরা তাড়াহুড়া করো না।
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَـٰذَا ٱلْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ
অর্থ: আর তারা বলে, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে বল, এ ওয়াদা কখন পূর্ণ হবে?’
لَوْ يَعْلَمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ حِينَ لَا يَكُفُّونَ عَن وُجُوهِهِمُ ٱلنَّارَ وَلَا عَن ظُهُورِهِمْ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থ: হায়, কাফিররা যদি সে সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের সামনে ও পেছন থেকে আগুন ফিরাতে পারবে না। আর তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না;
بَلْ تَأْتِيهِم بَغْتَةً فَتَبْهَتُهُمْ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ رَدَّهَا وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ
অর্থ: বরং অকস্মাৎ তাদের উপর তা এসে পড়বে। অতঃপর তাদেরকে হতবাক করে দেবে। ফলে তারা তা ফিরাতে সক্ষম হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না।
وَلَقَدِ ٱسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَحَاقَ بِٱلَّذِينَ سَخِرُوا۟ مِنْهُم مَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
অর্থ: আর তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হয়েছিল; পরিণামে তারা যা নিয়ে ঠাট্টা করত তাই বিদ্রূপকারীদেরকে ঘিরে ফেলেছিল।* * রাসূলগণ আযাব আসার ভয় দেখালে কাফিররা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। পরিশেষে তাদের ঠাট্টার বস্ত্ত অর্থাৎ আযাব এসে তাদেরকে ঘিরে ফেলত এবং সে আযাবই তাদেরকে গ্রাস করত।
قُلْ مَن يَكْلَؤُكُم بِٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ مِنَ ٱلرَّحْمَـٰنِ ۗ بَلْ هُمْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِم مُّعْرِضُونَ
অর্থ: বল, ‘রাতে এবং দিনে পরম করুণাময় থেকে কে তোমাদেরকে রক্ষা করবে?’ তবুও তারা তাদের রবের স্মরণ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
أَمْ لَهُمْ ءَالِهَةٌ تَمْنَعُهُم مِّن دُونِنَا ۚ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَ أَنفُسِهِمْ وَلَا هُم مِّنَّا يُصْحَبُونَ
অর্থ: আমি ছাড়া তাদের কি এমন কোন দেব-দেবী আছে যারা তাদেরকে রক্ষা করতে পারে? তারা তো নিজদেরকেই সাহায্য করতে সক্ষম নয় এবং আমার বিরুদ্ধে তারা কোন সঙ্গীও পাবে না।* * يصحبون এর অর্থ-তারা সঙ্গী পাবে না। ইবন আববাস (রাঃ) বলেন, এখানে এর অর্থ হল يجارون অর্থাৎ আল্লাহর শাস্তি হতে মুক্তি পেতে তাদেরকে সাহায্য করবে এমন কাউকে তারা পাবে না।
بَلْ مَتَّعْنَا هَـٰٓؤُلَآءِ وَءَابَآءَهُمْ حَتَّىٰ طَالَ عَلَيْهِمُ ٱلْعُمُرُ ۗ أَفَلَا يَرَوْنَ أَنَّا نَأْتِى ٱلْأَرْضَ نَنقُصُهَا مِنْ أَطْرَافِهَآ ۚ أَفَهُمُ ٱلْغَـٰلِبُونَ
অর্থ: বরং আমিই তাদেরকে ও তাদের পূর্বপুরুষদেরকে উপভোগ করতে দিয়েছিলাম; উপরন্তু তাদের হায়াতও দীর্ঘ হয়েছিল। তারা কি দেখে না যে, আমি চতুর্দিক থেকে তাঁদের দেশকে সঙ্কুচিত করে দিচ্ছি? তবুও কি তারা জয়ী হবে?
قُلْ إِنَّمَآ أُنذِرُكُم بِٱلْوَحْىِ ۚ وَلَا يَسْمَعُ ٱلصُّمُّ ٱلدُّعَآءَ إِذَا مَا يُنذَرُونَ
অর্থ: বল, ‘আমি তো কেবল ওহী দ্বারাই তোমাদেরকে সতর্ক করি’। কিন্তু যারা বধির তাদেরকে যখন সতর্ক করা হয়, তখন তারা সে আহবান শোনে না।
وَلَئِن مَّسَّتْهُمْ نَفْحَةٌ مِّنْ عَذَابِ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ يَـٰوَيْلَنَآ إِنَّا كُنَّا ظَـٰلِمِينَ
অর্থ: আর তোমার রবের আযাবের সামান্য কিছুও যদি তাদেরকে স্পর্শ করে, তবে তারা অবশ্যই বলে উঠবে-‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরাতো অবশ্যই যালিম ছিলাম’।
وَنَضَعُ ٱلْمَوَٰزِينَ ٱلْقِسْطَ لِيَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْـًٔا ۖ وَإِن كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا ۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَـٰسِبِينَ
অর্থ: আর কিয়ামতের দিন আমি ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারো প্রতি কোন অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা হাযির করব। আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট।
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا مُوسَىٰ وَهَـٰرُونَ ٱلْفُرْقَانَ وَضِيَآءً وَذِكْرًا لِّلْمُتَّقِينَ
অর্থ: আর আমি তো মূসা ও হারূনকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী দিয়েছিলাম এবং মুত্তাকীদের জন্য দিয়েছিলাম জ্যোতি ও উপদেশ।
ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِٱلْغَيْبِ وَهُم مِّنَ ٱلسَّاعَةِ مُشْفِقُونَ
অর্থ: যারা না দেখেও তাদের রবকে ভয় করে এবং কিয়ামত সম্পর্কে থাকে ভীত-সন্ত্রস্ত।
وَهَـٰذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنَـٰهُ ۚ أَفَأَنتُمْ لَهُۥ مُنكِرُونَ
অর্থ: আর এটা বরকতময় উপদেশ, যা আমি নাযিল করেছি। তবুও কি তোমরা তা অস্বীকার করবে?
۞ وَلَقَدْ ءَاتَيْنَآ إِبْرَٰهِيمَ رُشْدَهُۥ مِن قَبْلُ وَكُنَّا بِهِۦ عَـٰلِمِينَ
অর্থ: আর আমি তো ইতঃপূর্বে ইবরাহীমকে সঠিক পথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে ছিলাম সম্যক অবগত।
إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَا هَـٰذِهِ ٱلتَّمَاثِيلُ ٱلَّتِىٓ أَنتُمْ لَهَا عَـٰكِفُونَ
অর্থ: যখন সে তার পিতা ও তার কওমকে বলল, ‘এ মূর্তিগুলো কী, যেগুলোর পূজায় তোমরা রত রয়েছ’?
قَالُوا۟ وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا لَهَا عَـٰبِدِينَ
অর্থ: তারা বলল, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি’।
قَالَ لَقَدْ كُنتُمْ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُمْ فِى ضَلَـٰلٍ مُّبِينٍ
অর্থ: সে বলল, ‘তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা সবাই রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে’।
قَالُوٓا۟ أَجِئْتَنَا بِٱلْحَقِّ أَمْ أَنتَ مِنَ ٱللَّـٰعِبِينَ
অর্থ: তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট সত্য নিয়ে এসেছ, নাকি তুমি খেল-তামাশা করছ’?
قَالَ بَل رَّبُّكُمْ رَبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ٱلَّذِى فَطَرَهُنَّ وَأَنَا۠ عَلَىٰ ذَٰلِكُم مِّنَ ٱلشَّـٰهِدِينَ
অর্থ: সে বলল, ‘না, বরং তোমাদের রব তো আসমানসমূহ ও যমীনের রব; যিনি এ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আর এ বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী’।
وَتَٱللَّهِ لَأَكِيدَنَّ أَصْنَـٰمَكُم بَعْدَ أَن تُوَلُّوا۟ مُدْبِرِينَ
অর্থ: ‘আর আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করব’।
فَجَعَلَهُمْ جُذَٰذًا إِلَّا كَبِيرًا لَّهُمْ لَعَلَّهُمْ إِلَيْهِ يَرْجِعُونَ
অর্থ: অতঃপর সে মূর্তিগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল তাদের বড়টি ছাড়া, যাতে তারা তাঁর দিকে ফিরে আসে।
قَالُوا۟ مَن فَعَلَ هَـٰذَا بِـَٔالِهَتِنَآ إِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
অর্থ: তারা বলল, ‘আমাদের দেবদেবীগুলোর সাথে কে এমনটি করল? নিশ্চয় সে যালিম’।
قَالُوا۟ سَمِعْنَا فَتًى يَذْكُرُهُمْ يُقَالُ لَهُۥٓ إِبْرَٰهِيمُ
অর্থ: তাদের কেউ কেউ বলল, ‘আমরা শুনেছি এক যুবক এই মূর্তিগুলোর সমালোচনা করে। তাকে বলা হয় ইবরাহীম’।
قَالُوا۟ فَأْتُوا۟ بِهِۦ عَلَىٰٓ أَعْيُنِ ٱلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَشْهَدُونَ
অর্থ: তারা বলল, ‘তাহলে তাকে লোকজনের সামনে নিয়ে এসো, যাতে তারা দেখতে পারে’।
قَالُوٓا۟ ءَأَنتَ فَعَلْتَ هَـٰذَا بِـَٔالِهَتِنَا يَـٰٓإِبْرَٰهِيمُ
অর্থ: তারা বলল, ‘হে ইবরাহীম, তুমিই কি আমাদের দেবদেবীগুলোর সাথে এরূপ করেছ’?
قَالَ بَلْ فَعَلَهُۥ كَبِيرُهُمْ هَـٰذَا فَسْـَٔلُوهُمْ إِن كَانُوا۟ يَنطِقُونَ
অর্থ: সে বলল, ‘বরং তাদের এ বড়টিই একাজ করেছে। তাই এদেরকেই জিজ্ঞাসা কর, যদি এরা কথা বলতে পারে’।
فَرَجَعُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ فَقَالُوٓا۟ إِنَّكُمْ أَنتُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ
অর্থ: তখন তারা নিজদের দিকে ফিরে গেল* এবং একে অন্যকে বলতে লাগল, ‘তোমরাই তো যালিম’। * এ বাক্যের অর্থ ‘তারা মনে মনে চিন্তা করল তারা বিবেক বুদ্ধি খাটাল’ ও হতে পারে।
ثُمَّ نُكِسُوا۟ عَلَىٰ رُءُوسِهِمْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هَـٰٓؤُلَآءِ يَنطِقُونَ
অর্থ: অতঃপর তাদের মাথা অবনত হয়ে গেল এবং বলল, ‘তুমি তো জানই যে, এরা কথা বলতে পারে না’।
قَالَ أَفَتَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكُمْ شَيْـًٔا وَلَا يَضُرُّكُمْ
অর্থ: সে (ইবরাহীম) বলল, ‘তাহলে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত কর, যা তোমাদের কোন উপকার করতে পারে না এবং কোন ক্ষতিও করতে পারে না’?
أُفٍّ لَّكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ ۖ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
অর্থ: ‘ধিক তোমাদেরকে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত কর তাদেরকে! ‘তবুও কি তোমরা বুঝবে না’?
قَالُوا۟ حَرِّقُوهُ وَٱنصُرُوٓا۟ ءَالِهَتَكُمْ إِن كُنتُمْ فَـٰعِلِينَ
অর্থ: তারা বলল, ‘তাকে আগুনে পুড়িয়ে দাও এবং তোমাদের দেবদেবীদেরকে সাহায্য কর, যদি তোমরা কিছু করতে চাও’।
قُلْنَا يَـٰنَارُ كُونِى بَرْدًا وَسَلَـٰمًا عَلَىٰٓ إِبْرَٰهِيمَ
অর্থ: আমি বললাম, ‘হে আগুন, তুমি শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও ইবরাহীমের জন্য’ ।
وَأَرَادُوا۟ بِهِۦ كَيْدًا فَجَعَلْنَـٰهُمُ ٱلْأَخْسَرِينَ
অর্থ: আর তারা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করে দিলাম।
وَنَجَّيْنَـٰهُ وَلُوطًا إِلَى ٱلْأَرْضِ ٱلَّتِى بَـٰرَكْنَا فِيهَا لِلْعَـٰلَمِينَ
অর্থ: আর আমি তাকে ও লূতকে উদ্ধার করে সে দেশে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি বিশ্ববাসীর জন্য বরকত রেখেছি।
وَوَهَبْنَا لَهُۥٓ إِسْحَـٰقَ وَيَعْقُوبَ نَافِلَةً ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا صَـٰلِحِينَ
অর্থ: আর আমি তাকে দান করেছিলাম ইসহাক ও ইয়াকূবকে অতিরিক্ত হিসেবে; আর তাদের প্রত্যেককেই আমি সৎকর্মশীল করেছিলাম।
وَجَعَلْنَـٰهُمْ أَئِمَّةً يَهْدُونَ بِأَمْرِنَا وَأَوْحَيْنَآ إِلَيْهِمْ فِعْلَ ٱلْخَيْرَٰتِ وَإِقَامَ ٱلصَّلَوٰةِ وَإِيتَآءَ ٱلزَّكَوٰةِ ۖ وَكَانُوا۟ لَنَا عَـٰبِدِينَ
অর্থ: আর তাদেরকে আমি নেতা বানিয়েছিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে সঠিক পথ দেখাত। আমি তাদের প্রতি সৎকাজ করার, সালাত কায়েম করার এবং যাকাত প্রদান করার জন্য ওহী প্রেরণ করেছিলাম। আর তারা আমারই ইবাদাত করত।
وَلُوطًا ءَاتَيْنَـٰهُ حُكْمًا وَعِلْمًا وَنَجَّيْنَـٰهُ مِنَ ٱلْقَرْيَةِ ٱلَّتِى كَانَت تَّعْمَلُ ٱلْخَبَـٰٓئِثَ ۗ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمَ سَوْءٍ فَـٰسِقِينَ
অর্থ: আর লূতকে আমি প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম। আমি তাকে এমন এক জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম, যার অধিবাসীরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত ছিল। তারা ছিল এক মন্দ ও পাপাচারী কওম।
وَأَدْخَلْنَـٰهُ فِى رَحْمَتِنَآ ۖ إِنَّهُۥ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ
অর্থ: আর আমি তাকে আমার রহমতের মধ্যে শামিল করে নিয়েছিলাম। সে ছিল সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।
وَنُوحًا إِذْ نَادَىٰ مِن قَبْلُ فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ فَنَجَّيْنَـٰهُ وَأَهْلَهُۥ مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ
অর্থ: আর স্মরণ কর নূহের কথা, ইতঃপূর্বে যখন সে আমাকে ডেকেছিল, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। অতঃপর তাকে ও তার পরিবারবর্গকে আমি মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
وَنَصَرْنَـٰهُ مِنَ ٱلْقَوْمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَآ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمَ سَوْءٍ فَأَغْرَقْنَـٰهُمْ أَجْمَعِينَ
অর্থ: আর আমি তাকে সেই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করেছিলাম, যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। তারা ছিল এক মন্দ কওম। তাই আমি তাদের সকলকেই পানিতে ডুবিয়ে মেরেছিলাম।
وَدَاوُۥدَ وَسُلَيْمَـٰنَ إِذْ يَحْكُمَانِ فِى ٱلْحَرْثِ إِذْ نَفَشَتْ فِيهِ غَنَمُ ٱلْقَوْمِ وَكُنَّا لِحُكْمِهِمْ شَـٰهِدِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর দাঊদ ও সুলায়মানের কথা, যখন তারা শস্যক্ষেত সম্পর্কে বিচার করছিল। যাতে রাতের বেলায় কোন কওমের মেষ ঢুকে পড়েছিল। আর আমি তাদের বিচার কাজ দেখছিলাম।
فَفَهَّمْنَـٰهَا سُلَيْمَـٰنَ ۚ وَكُلًّا ءَاتَيْنَا حُكْمًا وَعِلْمًا ۚ وَسَخَّرْنَا مَعَ دَاوُۥدَ ٱلْجِبَالَ يُسَبِّحْنَ وَٱلطَّيْرَ ۚ وَكُنَّا فَـٰعِلِينَ
অর্থ: অতঃপর আমি এ বিষয়ের ফয়সালা সুলায়মানকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। আর আমি তাদের প্রত্যেককেই দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান। আর আমি পর্বতমালা ও পাখীদেরকে দাঊদের অধীন করে দিয়েছিলাম, তারা দাঊদের সাথে আমার তাসবীহ পাঠ করত। আর এসবকিছু আমিই করছিলাম।
وَعَلَّمْنَـٰهُ صَنْعَةَ لَبُوسٍ لَّكُمْ لِتُحْصِنَكُم مِّنۢ بَأْسِكُمْ ۖ فَهَلْ أَنتُمْ شَـٰكِرُونَ
অর্থ: আর আমিই তাকে তোমাদের জন্য বর্ম বানানো শিক্ষা দিয়েছিলাম। যাতে তা যুদ্ধে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারে। সুতরাং তোমরা কি কৃতজ্ঞ হবে?
وَلِسُلَيْمَـٰنَ ٱلرِّيحَ عَاصِفَةً تَجْرِى بِأَمْرِهِۦٓ إِلَى ٱلْأَرْضِ ٱلَّتِى بَـٰرَكْنَا فِيهَا ۚ وَكُنَّا بِكُلِّ شَىْءٍ عَـٰلِمِينَ
অর্থ: আর আমি সুলায়মানের জন্য অনুগত করে দিয়েছিলাম প্রবল হাওয়াকে, যা তার নির্দেশে প্রবাহিত হত সেই দেশের দিকে, যেখানে আমি বরকত রেখেছি। আর আমি প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কেই অবগত ছিলাম।
وَمِنَ ٱلشَّيَـٰطِينِ مَن يَغُوصُونَ لَهُۥ وَيَعْمَلُونَ عَمَلًا دُونَ ذَٰلِكَ ۖ وَكُنَّا لَهُمْ حَـٰفِظِينَ
অর্থ: আর শয়তানদের মধ্যে কতক তার জন্য ডুবুরীর কাজ করত, এছাড়া অন্যান্য কাজও করত। আর আমিই তাদের জন্য হিফাযতকারী ছিলাম।
۞ وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥٓ أَنِّى مَسَّنِىَ ٱلضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর আইউবের কথা, যখন সে তার রবকে আহবান করে বলেছিল, ‘আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি। আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু’।
فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ فَكَشَفْنَا مَا بِهِۦ مِن ضُرٍّ ۖ وَءَاتَيْنَـٰهُ أَهْلَهُۥ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَذِكْرَىٰ لِلْعَـٰبِدِينَ
অর্থ: তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। আর তাদের সাথে তাদের মত আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদাতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।
وَإِسْمَـٰعِيلَ وَإِدْرِيسَ وَذَا ٱلْكِفْلِ ۖ كُلٌّ مِّنَ ٱلصَّـٰبِرِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর ইসমাঈল, ইদরীস ও যুল্ কিফল এর কথা, তাদের প্রত্যেকেই ধৈর্যশীল ছিল।
وَأَدْخَلْنَـٰهُمْ فِى رَحْمَتِنَآ ۖ إِنَّهُم مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ
অর্থ: আর তাদেরকে আমি আমার রহমতে শামিল করেছিলাম। তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ।
وَذَا ٱلنُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَـٰضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَىٰ فِى ٱلظُّلُمَـٰتِ أَن لَّآ إِلَـٰهَ إِلَّآ أَنتَ سُبْحَـٰنَكَ إِنِّى كُنتُ مِنَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর যুন-নূন এর কথা, যখন সে রাগান্বিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল যে, আমি তার উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করব না। তারপর সে অন্ধকার থেকে ডেকে বলেছিল, ‘আপনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই’। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম যালিম’ ।
فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ وَنَجَّيْنَـٰهُ مِنَ ٱلْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُـۨجِى ٱلْمُؤْمِنِينَ
অর্থ: অতঃপর আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং দুশ্চিন্তা থেকে তাকে উদ্ধার করেছিলাম। আর এভাবেই আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি।
وَزَكَرِيَّآ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥ رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর যাকারিয়্যার কথা, যখন সে তার রবকে আহবান করে বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, তুমি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী’।
فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ وَوَهَبْنَا لَهُۥ يَحْيَىٰ وَأَصْلَحْنَا لَهُۥ زَوْجَهُۥٓ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ يُسَـٰرِعُونَ فِى ٱلْخَيْرَٰتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا ۖ وَكَانُوا۟ لَنَا خَـٰشِعِينَ
অর্থ: অতঃপর আমি তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া। আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী করেছিলাম। তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতি সহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার নিকট বিনয়ী।
وَٱلَّتِىٓ أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهَا مِن رُّوحِنَا وَجَعَلْنَـٰهَا وَٱبْنَهَآ ءَايَةً لِّلْعَـٰلَمِينَ
অর্থ: আর স্মরণ কর সে নারীর কথা, যে নিজ সতীত্ব রক্ষা করেছিল। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার ‘রূহ’ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার পুত্রকে বিশ্ববাসীর জন্য করেছিলাম এক নিদর্শন ।
إِنَّ هَـٰذِهِۦٓ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَٰحِدَةً وَأَنَا۠ رَبُّكُمْ فَٱعْبُدُونِ
অর্থ: নিশ্চয় তোমাদের এ জাতি তো একই জাতি। আর আমিই তোমাদের রব। অতএব তোমরা আমার ইবাদাত কর।
وَتَقَطَّعُوٓا۟ أَمْرَهُم بَيْنَهُمْ ۖ كُلٌّ إِلَيْنَا رَٰجِعُونَ
অর্থ: কিন্তু তারা নিজদের কার্যকলাপে পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। সকলেই আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করবে।
فَمَن يَعْمَلْ مِنَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَا كُفْرَانَ لِسَعْيِهِۦ وَإِنَّا لَهُۥ كَـٰتِبُونَ
অর্থ: সুতরাং যে মুমিন অবস্থায় সৎকাজ করে তার প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করা হবে না। আর আমি তো তা লিখে রাখি।
وَحَرَٰمٌ عَلَىٰ قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَـٰهَآ أَنَّهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
অর্থ: আর আমি যে জনপদকে ধ্বংস করেছি তার সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তার অধিবাসীবৃন্দ আর ফিরে আসবে না।
حَتَّىٰٓ إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُم مِّن كُلِّ حَدَبٍ يَنسِلُونَ
অর্থ: অবশেষে যখন ইয়া’জূজ ও মা’জূজকে মুক্তি দেয়া হবে, আর তারা প্রতিটি উঁচু ভূমি হতে ছুটে আসবে।
وَٱقْتَرَبَ ٱلْوَعْدُ ٱلْحَقُّ فَإِذَا هِىَ شَـٰخِصَةٌ أَبْصَـٰرُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ يَـٰوَيْلَنَا قَدْ كُنَّا فِى غَفْلَةٍ مِّنْ هَـٰذَا بَلْ كُنَّا ظَـٰلِمِينَ
অর্থ: আর সত্য ওয়াদার সময় নিকটে আসলে হঠাৎ কাফিরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। তারা বলবে, ‘হায়, আমাদের দুর্ভোগ! আমরা তো এ বিষয়ে উদাসীন ছিলাম বরং আমরা ছিলাম যালিম’ ।
إِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ أَنتُمْ لَهَا وَٰرِدُونَ
অর্থ: নিশ্চয় তোমরা এবং আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদের পূজা কর, সেগুলো তো জাহান্নামের জ্বালানী। তোমরা সেখানে প্রবেশ করবে।
لَوْ كَانَ هَـٰٓؤُلَآءِ ءَالِهَةً مَّا وَرَدُوهَا ۖ وَكُلٌّ فِيهَا خَـٰلِدُونَ
অর্থ: যদি তারা ইলাহ হত তবে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করত না। আর তারা সবাই তাতে স্থায়ী হয়ে থাকবে।
لَهُمْ فِيهَا زَفِيرٌ وَهُمْ فِيهَا لَا يَسْمَعُونَ
অর্থ: সেখানে থাকবে তাদের আর্তনাদ, আর সেখানে তারা শুনতে পাবে না।
إِنَّ ٱلَّذِينَ سَبَقَتْ لَهُم مِّنَّا ٱلْحُسْنَىٰٓ أُو۟لَـٰٓئِكَ عَنْهَا مُبْعَدُونَ
অর্থ: আমার পক্ষ থেকে যাদের জন্য পূর্বেই কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে তা থেকে দূরে রাখা হবে।
لَا يَسْمَعُونَ حَسِيسَهَا ۖ وَهُمْ فِى مَا ٱشْتَهَتْ أَنفُسُهُمْ خَـٰلِدُونَ
অর্থ: তারা জাহান্নামের ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাবে না। সেখানে তারা তাদের মনঃপুত বস্তুর মধ্যে চিরকাল থাকবে।
لَا يَحْزُنُهُمُ ٱلْفَزَعُ ٱلْأَكْبَرُ وَتَتَلَقَّىٰهُمُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ هَـٰذَا يَوْمُكُمُ ٱلَّذِى كُنتُمْ تُوعَدُونَ
অর্থ: মহাভীতি তাদেরকে পেরেশান করবে না। আর ফেরেশতারা তাদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলবে, ‘এটাই তোমাদের সেই দিন, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল’।
يَوْمَ نَطْوِى ٱلسَّمَآءَ كَطَىِّ ٱلسِّجِلِّ لِلْكُتُبِ ۚ كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُۥ ۚ وَعْدًا عَلَيْنَآ ۚ إِنَّا كُنَّا فَـٰعِلِينَ
অর্থ: সে দিন আমি আসমানসমূহকে গুটিয়ে নেব, যেভাবে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত দলীল-পত্রাদি। যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবেই পুনরায় সৃষ্টি করব। ওয়াদা পালন করা আমার কর্তব্য। আমি তা পালন করবই।
وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِى ٱلزَّبُورِ مِنۢ بَعْدِ ٱلذِّكْرِ أَنَّ ٱلْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِىَ ٱلصَّـٰلِحُونَ
অর্থ: আর উপদেশ দেয়ার পর আমি কিতাবে লিখে দিয়েছি যে, ‘আমার যোগ্যতর বান্দাগণই পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হবে’।
إِنَّ فِى هَـٰذَا لَبَلَـٰغًا لِّقَوْمٍ عَـٰبِدِينَ
অর্থ: নিশ্চয় এতে ইবাদাতকারী সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ বাণী রয়েছে।
وَمَآ أَرْسَلْنَـٰكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَـٰلَمِينَ
অর্থ: আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।
قُلْ إِنَّمَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّ أَنَّمَآ إِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَٰحِدٌ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ
অর্থ: বল, ‘আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ একক ইলাহ। সুতরাং তোমরা কি আত্মসমর্পণকারী হবে’?
فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَقُلْ ءَاذَنتُكُمْ عَلَىٰ سَوَآءٍ ۖ وَإِنْ أَدْرِىٓ أَقَرِيبٌ أَم بَعِيدٌ مَّا تُوعَدُونَ
অর্থ: তবে তারা মুখ ফিরিয়ে নিলে তুমি বলে দিও, ‘আমি যথাযথভাবে তোমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি। আর আমি জানি না তোমাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা কি নিকটবর্তী না দূরবর্তী’।
إِنَّهُۥ يَعْلَمُ ٱلْجَهْرَ مِنَ ٱلْقَوْلِ وَيَعْلَمُ مَا تَكْتُمُونَ
অর্থ: তিনি প্রকাশ্য কথা সম্পর্কেও জানেন এবং তোমরা যা গোপন কর তাও জানেন।
وَإِنْ أَدْرِى لَعَلَّهُۥ فِتْنَةٌ لَّكُمْ وَمَتَـٰعٌ إِلَىٰ حِينٍ
অর্থ: আর আমি জানি না হয়তো তা তোমাদের জন্য এক পরীক্ষা কিছু কালের জন্য উপভোগের সুযোগ।