৭২ . আল জ্বিন - (الجن) | জ্বিন সম্প্রদায়
makkah, মোট আয়াতঃ ২৮
قُلْ أُوحِىَ إِلَىَّ أَنَّهُ ٱسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ ٱلْجِنِّ فَقَالُوٓا۟ إِنَّا سَمِعْنَا قُرْءَانًا عَجَبًا
অর্থ: বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে। অতঃপর বলেছে, ‘আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি,
يَهْدِىٓ إِلَى ٱلرُّشْدِ فَـَٔامَنَّا بِهِۦ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَآ أَحَدًا
অর্থ: যা সত্যের দিকে হিদায়াত করে; অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি। আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরীক করব না’।
وَأَنَّهُۥ تَعَـٰلَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا ٱتَّخَذَ صَـٰحِبَةً وَلَا وَلَدًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমাদের রবের মর্যাদা সমুচ্চ। তিনি কোন সংগিনী গ্রহণ করেননি এবং না কোন সন্তান’।
وَأَنَّهُۥ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى ٱللَّهِ شَطَطًا
অর্থ: ‘আর আমাদের মধ্যকার নির্বোধেরা আল্লাহর ব্যাপারে অবাস্তব কথা- বার্তা বলত’।
وَأَنَّا ظَنَنَّآ أَن لَّن تَقُولَ ٱلْإِنسُ وَٱلْجِنُّ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا
অর্থ: ‘অথচ আমরা তো ধারণা করতাম যে, মানুষ ও জিন কখনো আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করবে না’।
وَأَنَّهُۥ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ ٱلْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ ٱلْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
অর্থ: আর নিশ্চয় কতিপয় মানুষ কতিপয় জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা তাদের অহংকার বাড়িয়ে দিয়েছিল।
وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا۟ كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ ٱللَّهُ أَحَدًا
অর্থ: আর নিশ্চয় তারা ধারণা করেছিল যেমন তোমরা ধারণা করেছ যে, আল্লাহ কাউকে কখনই পুনরুত্থিত করবেন না।
وَأَنَّا لَمَسْنَا ٱلسَّمَآءَ فَوَجَدْنَـٰهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমরা আকাশ স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম*, কিন্তু আমরা সেটাকে পেলাম যে, তা কঠোর প্রহরী এবং উল্কাপিন্ড দ্বারা পরিপূর্ণ’। *আকাশের সংবাদ সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিলাম।
وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَـٰعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ ٱلْـَٔانَ يَجِدْ لَهُۥ شِهَابًا رَّصَدًا
অর্থ: আর আমরা তো সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে বসতাম, কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে, সে তার জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড পাবে’।
وَأَنَّا لَا نَدْرِىٓ أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَن فِى ٱلْأَرْضِ أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমরা জানি না, যমীনে যারা রয়েছে তাদের জন্য অকল্যাণ চাওয়া হয়েছে, নাকি তাদের রব তাদের ব্যাপারে মঙ্গল চেয়েছেন’।
وَأَنَّا مِنَّا ٱلصَّـٰلِحُونَ وَمِنَّا دُونَ ذَٰلِكَ ۖ كُنَّا طَرَآئِقَ قِدَدًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমাদের কতিপয় সৎকর্মশীল এবং কতিপয় এর ব্যতিক্রম। আমরা ছিলাম বিভিন্ন মত ও পথে বিভক্ত’।
وَأَنَّا ظَنَنَّآ أَن لَّن نُّعْجِزَ ٱللَّهَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَن نُّعْجِزَهُۥ هَرَبًا
অর্থ: ‘আর আমরা তো বুঝতে পেরেছি যে, আমরা কিছুতেই যমীনের মধ্যে আল্লাহকে অপারগ করতে পারব না এবং পালিয়েও কখনো তাকে অপারগ করতে পারব না’।
وَأَنَّا لَمَّا سَمِعْنَا ٱلْهُدَىٰٓ ءَامَنَّا بِهِۦ ۖ فَمَن يُؤْمِنۢ بِرَبِّهِۦ فَلَا يَخَافُ بَخْسًا وَلَا رَهَقًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমরা যখন হিদায়াতের বাণী শুনলাম, তখন তার প্রতি ঈমান আনলাম। আর যে তার রবের প্রতি ঈমান আনে, সে না কোন ক্ষতির আশংকা করবে এবং না কোন অন্যায়ের’।
وَأَنَّا مِنَّا ٱلْمُسْلِمُونَ وَمِنَّا ٱلْقَـٰسِطُونَ ۖ فَمَنْ أَسْلَمَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ تَحَرَّوْا۟ رَشَدًا
অর্থ: ‘আর নিশ্চয় আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক আছে আত্মসমর্পণকারী এবং আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক সীমালংঘনকারী। কাজেই যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তারাই সঠিক পথ বেছে নিয়েছে’।
وَأَمَّا ٱلْقَـٰسِطُونَ فَكَانُوا۟ لِجَهَنَّمَ حَطَبًا
অর্থ: ‘আর যারা সীমালঙ্ঘনকারী, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন’।
وَأَلَّوِ ٱسْتَقَـٰمُوا۟ عَلَى ٱلطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَـٰهُم مَّآءً غَدَقًا
অর্থ: আর তারা যদি সঠিক পথে অবিচল থাকত, তাহলে আমি অবশ্যই তাদেরকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতাম।
لِّنَفْتِنَهُمْ فِيهِ ۚ وَمَن يُعْرِضْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِۦ يَسْلُكْهُ عَذَابًا صَعَدًا
অর্থ: যাতে আমি তা দিয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি। আর যে তার রবের স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাকে তিনি কঠিন আযাবে প্রবেশ করাবেন।
وَأَنَّ ٱلْمَسَـٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا۟ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدًا
অর্থ: আর নিশ্চয় মসজিদগুলো আল্লাহরই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।
وَأَنَّهُۥ لَمَّا قَامَ عَبْدُ ٱللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا۟ يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا
অর্থ: আর নিশ্চয় আল্লাহর বান্দা* যখন তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়াল, তখন তারা** তার নিকট ভিড় জমাল। *রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। **কাফিরগণ।
قُلْ إِنَّمَآ أَدْعُوا۟ رَبِّى وَلَآ أُشْرِكُ بِهِۦٓ أَحَدًا
অর্থ: বল, ‘নিশ্চয় আমি আমার রবকে ডাকি এবং তার সাথে কাউকে শরীক করি না’।
قُلْ إِنِّى لَآ أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
অর্থ: বল, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য না কোন অকল্যাণ করার ক্ষমতা রাখি এবং না কোন কল্যাণ করার’।
قُلْ إِنِّى لَن يُجِيرَنِى مِنَ ٱللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِۦ مُلْتَحَدًا
অর্থ: বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছ থেকে কেউ আমাকে রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ছাড়া কখনো আমি কোন আশ্রয়ও পাব না।
إِلَّا بَلَـٰغًا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِسَـٰلَـٰتِهِۦ ۚ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا
অর্থ: কেবল আল্লাহর বাণী ও তাঁর রিসালাত পৌঁছানোই দায়িত্ব। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা চিরস্থায়ী হবে।
حَتَّىٰٓ إِذَا رَأَوْا۟ مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا
অর্থ: অবশেষে যখন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে, যে সম্পর্কে তাদেরকে সাবধান করা হয়েছিল। তখন তারা জানতে পারবে যে, সাহায্যকারী হিসেবে কে অধিকতর দুর্বল এবং সংখ্যায় কারা সবচেয়ে কম।
قُلْ إِنْ أَدْرِىٓ أَقَرِيبٌ مَّا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُۥ رَبِّىٓ أَمَدًا
অর্থ: বল, ‘আমি জানি না তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তা কি নিকটবর্তী নাকি এর জন্য আমার রব কোন দীর্ঘ মেয়াদ নির্ধারণ করবেন’।
عَـٰلِمُ ٱلْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِۦٓ أَحَدًا
অর্থ: তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না।
إِلَّا مَنِ ٱرْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُۥ يَسْلُكُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ رَصَدًا
অর্থ: তবে তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া। আর তিনি তখন তার সামনে ও তার পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করবেন।
لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا۟ رِسَـٰلَـٰتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَىْءٍ عَدَدًۢا
অর্থ: যাতে তিনি এটা জানতে পারেন যে, তারা* তাদের রবের রিসালাত পৌঁছিয়েছে কিনা। আর তাদের কাছে যা রয়েছে, তা তিনি পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি প্রতিটি বস্তু গুণে গুণে হিসাব করে রেখেছেন। *রাসূলগণ।