৫২ . আত্ ত্বুর - (الـطور) | পাহাড়
makkah, মোট আয়াতঃ ৪৯
وَٱلْبَيْتِ ٱلْمَعْمُورِ
অর্থ: কসম আবাদ গৃহের,* * আবাদ গৃহ বলতে সপ্তাকাশের বায়তুল মা‘মূরকে বুঝানো হয়েছে। অগণিত ফেরেশতা নিরবচ্ছিন্ন ইবাদাতে যা আবাদ রেখেছে।
وَٱلْبَحْرِ ٱلْمَسْجُورِ
অর্থ: কসম তরঙ্গ-বিক্ষুব্ধ সাগরের,* * অন্য তাফসীর মতে-আগুনের সাগর যা দুনিয়াতে হতে পারে, অথবা কিয়ামতে।
يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَىٰ نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
অর্থ: সেদিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
هَـٰذِهِ ٱلنَّارُ ٱلَّتِى كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
অর্থ: ‘এটি সেই জাহান্নাম যা তোমরা অস্বীকার করতে।’
ٱصْلَوْهَا فَٱصْبِرُوٓا۟ أَوْ لَا تَصْبِرُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ ۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ: তোমরা আগুনে প্রবেশ কর*, তারপর তোমরা ধৈর্যধারণ কর বা না কর, উভয়ই তোমাদের জন্য সমান; তোমাদেরকে তো কেবল তোমাদের আমলের প্রতিফল দেয়া হচ্ছে। * অন্য তাফসীর মতে- ‘‘তোমরা এর উত্তাপ ভোগ কর’’।
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّـٰتٍ وَنَعِيمٍ
অর্থ: নিশ্চয় মুত্তাকীরা (থাকবে) জান্নাতে ও প্রাচুর্যে।
فَـٰكِهِينَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ
অর্থ: তাদের রব তাদেরকে যা দিয়েছেন তা উপভোগ করবে, আর তাদের রব তাদেরকে বাঁচাবেন জ্বলন্ত আগুনের আযাব থেকে।
كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ: তোমরা তৃপ্তি সহকারে খাও ও পান কর, তোমরা যে আমল করতে তার বিনিময়ে।
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ ۖ وَزَوَّجْنَـٰهُم بِحُورٍ عِينٍ
অর্থ: সারিবদ্ধ পালঙ্কে তারা হেলান দিয়ে বসবে; আর আমি তাদেরকে মিলায়ে দেব ডাগরচোখা হূর-এর সাথে।
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَـٰنٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَآ أَلَتْنَـٰهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَىْءٍ ۚ كُلُّ ٱمْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
অর্থ: আর যারা ঈমান আনে এবং তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানের সাথে তাদের অনুসরণ করে, আমরা তাদের সাথে তাদের সন্তানদের মিলন ঘটাব এবং তাদের কর্মের কোন অংশই কমাব না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কামাইয়ের ব্যাপারে দায়ী থাকবে।
وَأَمْدَدْنَـٰهُم بِفَـٰكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
অর্থ: আর আমি তাদেরকে অতিরিক্ত দেব ফলমূল ও গোশত যা তারা কামনা করবে।
يَتَنَـٰزَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
অর্থ: তারা পরস্পরের মধ্যে পানপাত্র বিনিময় করবে; সেখানে থাকবে না কোন বেহুদা কথাবার্তা এবং কোন পাপকাজ।
۞ وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
অর্থ: আর তাদের সেবায় চারপাশে ঘুরবে বালকদল; তারা যেন সুরক্ষিত মুক্তা।
وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ
অর্থ: আর তারা একে অপরের মুখোমুখি হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে,
قَالُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِىٓ أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
অর্থ: তারা বলবে, ‘পূর্বে আমরা আমাদের পরিবারের মধ্যে শঙ্কিত ছিলাম।’
فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَىٰنَا عَذَابَ ٱلسَّمُومِ
অর্থ: ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেছেন।’
إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْبَرُّ ٱلرَّحِيمُ
অর্থ: নিশ্চয় পূর্বে আমরা তাঁকে ডাকতাম; নিশ্চয় তিনি ইহসানকারী, পরম দয়ালু।
فَذَكِّرْ فَمَآ أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
অর্থ: অতএব, তুমি উপদেশ দিতে থাক; কারণ তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি গণক নও এবং উন্মাদও নও।
أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِۦ رَيْبَ ٱلْمَنُونِ
অর্থ: তারা কি বলছে, ‘সে (মুহাম্মাদ) একজন কবি? আমরা তার মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছি।’
قُلْ تَرَبَّصُوا۟ فَإِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُتَرَبِّصِينَ
অর্থ: বল, ‘তোমরা অপেক্ষায় থাক! আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষাকারীদের অন্তর্ভুক্ত রইলাম।’
أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَـٰمُهُم بِهَـٰذَآ ۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
অর্থ: তাদের বিবেক কি তাদেরকে এ আদেশ দেয়, না তারা সীমালংঘনকারী কওম?
أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُۥ ۚ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
অর্থ: তারা কি বলে, ‘সে এটা বানিয়ে বলছে?’ বরং তারা ঈমান আনে না।
فَلْيَأْتُوا۟ بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِۦٓ إِن كَانُوا۟ صَـٰدِقِينَ
অর্থ: অতএব, তারা যদি সত্যবাদী হয় তবে তার অনুরূপ বাণী নিয়ে আসুক।
أَمْ خُلِقُوا۟ مِنْ غَيْرِ شَىْءٍ أَمْ هُمُ ٱلْخَـٰلِقُونَ
অর্থ: তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা?
أَمْ خَلَقُوا۟ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ ۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ
অর্থ: তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।
أَمْ عِندَهُمْ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ ٱلْمُصَۣيْطِرُونَ
অর্থ: তোমার রবের গুপ্তভান্ডার কি তাদের কাছে আছে, না তারা সব কিছু নিয়ন্ত্রণকারী?
أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ ۖ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَـٰنٍ مُّبِينٍ
অর্থ: নাকি তাদের আছে সিঁড়ি, যাতে চড়ে তারা (ঊর্ধ্বলোকের কথা) শুনতে পায়; তাদের শ্রোতা স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসুক না?
أَمْ تَسْـَٔلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
অর্থ: তবে কি তুমি তাদের কাছে প্রতিদান চাও যে, তারা তা ভারী জরিমানা মনে করে?
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
অর্থ: নাকি তাদের কাছে আছে গায়েবের জ্ঞান, যা তারা লিখছে?
أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا ۖ فَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ هُمُ ٱلْمَكِيدُونَ
অর্থ: নাকি তারা ষড়যন্ত্র করতে চায়? অতএব যারা কুফরী করে তারাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার।
أَمْ لَهُمْ إِلَـٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِ ۚ سُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
অর্থ: নাকি তাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য ইলাহ আছে? তারা যে শিরক করে তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।
وَإِن يَرَوْا۟ كِسْفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ سَاقِطًا يَقُولُوا۟ سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
অর্থ: আর কোন আকাশখন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলে তারা বলবে, ‘এটি তো এক পুঞ্জীভূত মেঘ’!
فَذَرْهُمْ حَتَّىٰ يُلَـٰقُوا۟ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى فِيهِ يُصْعَقُونَ
অর্থ: অতএব, তাদেরকে ছেড়ে দাও সেদিন পর্যন্ত যেদিন তারা ধ্বংস হবে।
يَوْمَ لَا يُغْنِى عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْـًٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থ: যেদিন তাদের পক্ষ থেকে কৃত তাদের ষড়যন্ত্র কোন কাজে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।
وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
অর্থ: আর নিশ্চয় যারা যুলম করবে তাদের জন্য থাকবে এছাড়া আরো আযাব; কিন্তু তাদের বেশীরভাগই জানে না।
وَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا ۖ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
অর্থ: আর তোমাদের রবের সিদ্ধান্তের জন্য ধৈর্যধারণ কর; কারণ তুমি আমার চোখের সামনেই আছ, তুমি যখন জেগে ওঠ তখন তোমার রবের সপ্রশংস তাসবীহ পাঠ কর।